সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ভূমিকা অনেক। এমনকি খাদ্যাভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও অবদান রাখে। খাদ্যতালিকায় কিছু বিশেষ খাবার মনকে চাঙা রাখতে সাহায্য করে। মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনের প্রতিবেদনে পুষ্টিবিদরা বলছেন কিছু পুষ্টিকর খাবার আছে যা ডোপামিন ও সেরেটোনিনের মতো হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে সামগ্রিকভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ ঘটায়।
চর্বিযুক্ত মাছ: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস চর্বিযুক্ত মাছ। স্যামন এবং অ্যালবাকোর টুনার মতো মাছে ওমেগা থ্রি, ডকোসাহেক্সায়েনোয়িক অ্যাসিড (ডিএইচএ) এবং ইকোসাপেন্টাইনয়িক অ্যাসিড থাকে যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। ওমেগা থ্রি মস্তিষ্কের কোষের ঝিল্লির তরলতায় অবদান রাখে এবং মস্তিষ্কের বিকাশ এবং কোষ সংকেত পাঠাতে প্রধান ভূমিকা রাখে। গবেষণা থেকে জানা যায়, মাছের তেলের মধ্যে যে ওমেগা থ্রি পাওয়া যায় তা মানসিক চাপ কমায়।
ডার্ক চকলেট: শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় ডার্ক চকলেটে, যা মেজাজ প্রফুল্ল করার প্রাকৃতিক ক্ষমতা রাখে। এ ছাড়া এতে আছে ট্রিপটোফ্যান, সেরোটোনিন নামক উপাদান, যা সুখ এবং শিথিলতার অনুভূতিতে অবদান রাখে। মন ভালো রাখতে প্রতিদিন কিছু পরিমাণ ডার্ক চকলেট খেতে পারেন।
অ্যাভোকাডো: ভিটামিন বি৩ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ অ্যাভোকাডো। অ্যাভোকাডো সেরোটোনিন উৎপাদনে অবদান রাখে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে মন ভালো রাখার সঙ্গেও আছে এর সম্পর্ক। সালাদ, স্যান্ডউইচ বা স্ন্যাক হিসেবে অ্যাভোকাডো রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়।
বেরি জাতীয় ফল: স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাস্পবেরিসহ বেরিগুলো শুধু সুস্বাদু নয়; বরং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এই পুষ্টিকর বেরিগুলো মেজাজ ভালো রাখতে এবং বিষণ্নতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন কিছু পরিমাণ বেরি খাওয়া ভালো।
আরও পড়ুন: হঠাৎ করে ফুড পয়জনিং হলে যা করবেন
কলা: দেশের ভুল জনপ্রিয় ফলের মধ্যে কলা অন্যতম। এই ফলটিতে আছ প্রচুর পরিমাণ শর্করা, ভিটামিন এ, বি, সি ও ক্যালসিয়াম, লৌহ ও পর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি সেরোটোনিন এবং ডোপামিন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। নিউরোট্রান্সমিটারগুলো মেজাজ নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ওটস: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য অনেকেই ওটস খান। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। সারা দিনের শক্তির জোগান দেয় ওটস। এছাড়াও ওটসে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে স্থিতিশীল রাখে। ওটস এতটাই স্বাস্থ্যকর খাবার যে একে সুপারফুডও বলা হয়।
বাদাম: বাদাম বা আখরোট জাতীয় খাবারেও রয়েছে সেরোটোনিন ও ট্রিপটোফ্যান নামক উপাদান, যা মানসিকভাবে স্বস্তি দেয়। এ ছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে, যা বিষণ্নতার ঝুঁকি কমায়। সকালের নাশতা এবং দুপুরের খাবারের মাঝে স্ন্যাক হিসেবে বাদাম রাখুন। অথবা খাবারের সময় সালাদেও বাদাম ব্যবহার করতে পারেন।