নারীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় যখন সে তার ভেতরে অন্য একটি জীবন ধারণ করে। গর্ভাবস্থায় নারীর সর্বোচ্চ যত্ন প্রয়োজন, কারণ তার মধ্যেই বেড়ে ওঠে আরেকটি প্রাণ। মায়ের থেকে পুষ্টি নিয়ে বেড়ে ওঠে গর্ভে সন্তান। তাই মায়ের খাবারের দিকে বাড়তি নজর দিতে হয় এই সময়ে। অনেক নারী সুস্থ থাকার জন্য জাফরান বা স্যাফরন খান। অনেকে একে কেশর বলেন। যে নামেই বলা হয় এটা দারুণ উপকারী। অন্যদিকে প্রচলিত আছে গর্ভাবস্থায় দুধের সঙ্গে জাফরান খেলে সন্তানের গায়ের রং উজ্জ্বল হয়। বিষয়টি সঠিক কিনা তা উঠে এসেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে।
ভারতের মাদারহুড হাসপাতালের প্রসূতি পরামর্শদাতা ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুরভী সিদ্ধার্থ বলেন, জাফরানে এমন কোনও জাদুকরী বৈশিষ্ট্য নেই যা শিশুর ত্বকে প্রভাব ফেলবে। জাফরান খেলে শিশুর রঙে কোনও প্রভাব পড়ে না। জাফরান শিশুর গায়ের রং উজ্জ্বল করবে এটা বলা ভুল। কারণ বৈজ্ঞানিকভাবে এটি প্রমাণিত হয়নি। একটি শিশুর চুল, ত্বক এবং চোখের রং জেনেটিক্যালি নির্ধারিত হয়।
গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার উপকারীতা:জাফরানের নানান উপকারীতা আছে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়া শরীরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে মনে অনেক অনেক চিকিৎসক।
জাফরানের উপকারীতা নিয়ে ডা. সুরভী বলেন, তবে এটা ঠিক জাফরান অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা মা এবং সন্তানের জন্য ভালো। এছাড়া গর্ভকালীন প্রদাহ দূর করার ক্ষমতার কারণে, জাফরান মায়ের খাদ্যতালিকার অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন অনেক চিকিৎসক।
এছাড়াও, জাফরান অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট উপাদানও থাকে। এই কারণে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং উদ্বেগ কমানোর ক্ষেত্রেও কেশর প্রভাব ফেলে। ফলে মায়ের উপর মানসিক চাপ কম পড়ে।
বিভিন্ন হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে এই সময়ে। তার জেরে শরীরের নানা অংশে ব্যথা, টান ধরার সমস্যা হয়। প্রায় সময়ে তা অসহনীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু নিয়মিত জাফরান খেলে এ সবের থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কারণ জাফরান ব্যথা কমানোর ওষুধ হিসাবেও কাজ করে। পেশি নমনীয় হয়। তার সঙ্গে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে।
হবু মায়েদের অনেকে রক্তশূন্যতায় ভোগেন বলে চিকিৎকরা আয়রন সমদ্ধ খাবার খেতে বলেন। প্রতিদিন কিছু পরিমাণে জাফরান খেলে আয়রন এবং হিমোগ্লেবিন মাত্রা বিপদহীন মাত্রায় থাকে। শুধু তাই নয়, ভালো মেজাজে ঘুম এবং ত্বকের নানারকম সমস্যাও দূর হয় প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে কেশর দুধ খেলে।
সাবধানতা: ডা.সুরভীও জাফরান কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কথাও জানিয়েছেন। তিনি জানান, কিছু মায়েদের বেলায় জাফরান খাওয়ার পর বমি বমি ভাব হয় এবং উদ্বেগ বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, সমস্যা গুরুতর হলে নাক দিয়ে রক্তপাতও হতে পারে। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।