লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় ঝড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝোড়ো বাতাসে আম, ভুট্টা, গম, ধানসহ উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গাছ চাপা পড়ে সন্তোষ কুমার (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের কবলে পড়ে ৪ শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৯ মে) রাতে ও বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে থেমে থেমে ঝোড়ো হাওয়া বইতে থাকে। এতে পাঁচ উপজেলার অন্তত অর্ধশত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। ফলে জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
গাছ চাপা পড়ে নিহত সন্তোষ কুমার লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের উত্তর গোবদা চাত্রারপাড় গ্রামের প্রফুল্য কুমারের ছেলে। আহতরা হচ্ছে- কালীগঞ্জ উপজেলার হয়রত আবু বক্কর সিদ্দিক হাফিজিয়া নুরানী মাদরাসার শিক্ষাথী মাহমুদুল হাসান, হাফেজ হাবিবুর, মিজানুর রহমান ও মমিনুর ইসলাম।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান নান্নু বলেন, সকালে ঝড় শুরু হলে সন্তোষ কুমার ঘরের টিন সরাতে যান। এ সময় তিনি গাছ চাপা পড়েন। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত ১০টার পরে হঠাৎ করে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে ভুট্টা ক্ষেতসহ শসা, ঝিংগে ও করলাসহ কৃষকদের নানান জাতের সবজি। সব মিলে কৃষক পরিবারে কান্নার রোল পড়েছে। একদিকে বসতবাড়ি লন্ডভন্ড অন্যদিকে কষ্টার্জিত ফসল ঘরে তোলার আগেই শেষ। এছাড়াও কালীগঞ্জ উপজেলার হয়রত আবু বক্কর সিদ্দিক হাফিজিয়া নুরানী মাদরাসাসহ ঘরবাড়ি ঝড়ে উড়ে গেছে। এতে অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেছি। তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।
হয়রত আবু বক্কর সিদ্দিক হাফিজিয়া নুরানী মাদরাসার শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে মাদরাসায় ক্লাস চলছিল। পরে হঠাৎ করে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড় শুরু হয়। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিনের চালা উড়ে শিক্ষার্থীদের ওপরে পড়ে যায়। এতে ৪ শিক্ষার্থী আহত হয়। বর্তমান তারা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ আছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ ঢাকা পোস্টকে জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তীব্র বাতাস ও বজ্রপাতসহ ঝড় হয়েছে। এ কারণে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এলাকাগুলো পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তবে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই।