শনিবার (১৫ জুন) সকালে গণভবনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে বৃক্ষনিধন করে গেছেন জিয়াউর রহমান। শুধু ক্ষমতায় থাকাকালীন নয়, আন্দোলনের নামেও বৃক্ষনিধন করেছে বিএনপি-জামায়াত। অথচ জলবায়ু পরিবর্তন বা পরিবেশ রক্ষা নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই আওয়ামী লীগ বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নিয়েছিল। রেসকোর্স ময়দানে ঘোড়ার দৌড় বন্ধ করে নারকেল গাছ লাগিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামন। গণভবনের অধিকাংশ পুরনো গাছ জাতির পিতার নিজে হাতে লাগানো।
বিএনপির মুখে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের কথা শুনে হাসি পায়৷ নির্বাচনের নামে প্রহসন করে গেছেন জিয়াউর রহমান৷ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা শুধু মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে তা নয়; গণতান্ত্রিক ধারাও তারা নষ্ট করে গিয়েছিল। জিয়া-এরশাদ সবাই একই কাজ করেছেন। শুধু অবহেলিত ছিল কৃষকশ্রেণি।
‘সার চাওয়ার অপরাধে এ দেশে কৃষকের ওপর গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটেছে খালেদা জিয়ার আমলে। নিজেদের অপকর্মে জনগণ তাদের ওপর বীতশ্রদ্ধ। জনগণের ভোট চুরি করে এ দেশে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারে না; এটাই হলো বাস্তবতা। খালেদা জিয়াকেও ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল এই অপরাধে’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিদেশ থেকে বীজ আমদানি করতো, কেননা তাদের কয়েকজনের এটা নিয়ে ব্যবসা ছিল। ‘৯৬ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধা দেয়া আন্তর্জাতিক সংস্থা, ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল যাতে কৃষিতে ভর্তুকি বন্ধ করে দিই। আমি বলেছিলাম, আপনারা টাকা না দিলে আমি দেশের টাকাতেই তাদের ভর্তুকি দেবো।’
বিএনপি সরকার সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির পুরো টাকাই মেরে খেতো জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বনজ-ভেষজ-ফলজ গাছ লাগাতে সাধারণ মানুষকে দলীয়ভাবে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
‘কৃষকদের ভর্তুকি দেয়া হয়। টাকা দিতে গেলেই তো মাঝখান থেকে কেউ কেউ আবার তোলা তুলেন, মানে টাকা নেন। সেটা এখন বন্ধ হয়েছে ডিজিটাল ব্যবস্থায়’, যোগ করেন তিনি।
অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের ৪০ ভাগ পেঁয়াজের চাহিদা মেটানো হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। তাহলে আর কারও কাছে হাত পাততে হবে না। কেননা, ১৯৭৪ সাল নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে আমাদের। এখনো কিছু মানুষ সেই চেষ্টাটা করে যাচ্ছে।
‘আগে এক বেলা খেতে না পারা মানুষ এখন দুই থেকে তিন বেলা খেতে পারছেন। মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিং আর ডেভেলপমেন্টের নামে ধানমন্ডি থেকে গুলশান বনানী পর্যন্ত সব গাছ তো কেটে সাফ। এখন অবশ্য ছাদ বাগানের দিকে ঝুঁকছে মানুষ। এটাও ভালো। ’৯৬ সালে ২ হাজার গাছ লাগিয়েছিলাম গণভবনে। এখন এটা প্রায় খামারবাড়ি’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা জানান, প্রত্যেক বিভাগে একটি করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণযোগ্য সাইলো নির্মাণ করা হবে। দেশের কৃষি উৎপাদনে সেচকাজ পুরোটুকুই সৌরবিদ্যুৎ নির্ভর করার বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। প্রাথমিকভাবে খরচ হয়তো বেশি, পরে খরচ কম। চামড়া যারা সংগ্রহ করবেন, তাদের প্রত্যেকের কাছে লবণ পৌঁছে দেয়া হয়েছে, যাতে চামড়া নষ্ট না হয়। যেখানে-সেখানে কোরবানির করার মাধ্যমে যাতে পরিবেশ নষ্ট না হয়, খেয়াল রাখবেন সবাই।