দীর্ঘ আট বছর পর গত ১০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন। প্রবাস জীবনে পুরোপুরি গানের জগতের বাইরেই ছিলেন তিনি। গায়িকার অভিযোগ, ১৬ বছর গান গাইতে দেওয়া হয়নি তাকে। যার ফলে তার আয়ের উৎসই বন্ধ হয়ে যায়।
বিগত সরকারের আমলে কালো তালিকাভুক্ত করে রাখা হয়েছিল বেবী নাজনীনকে। বারবার গান করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। নানান নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন এই গায়িকা।
সম্প্রতি দেশের এক গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বিগত সময়ের অত্যাচার, ক্ষোভ, আক্ষেপ নিয়ে মুখ খুলেছেন বেবী নাজনীন। পাশাপাশি নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন তিনি।
বেবী নাজনীন বলেন, হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে কখনই আমাকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমাকে ব্ল্যাকলিস্টেড করেছে, অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। একজন শিল্পী যখন প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হয় তখন সে তো নিরাপদ নয়। বেঁচে থাকাটাও তো অনেক দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল।
গায়িকা বলেন, সে সময় আমার নাম দেখলেই কনসার্টের অনুমতি বাতিল করা হতো। পারিশ্রমিক ফেরত দিতে হয়েছে আমাকে। এমনও হয়েছে যে ৪০ লাখ টাকা পারিশ্রমিকও ফেরত দিয়েছি। কিন্তু আমার তো টাকা দরকার ছিল। আমার সন্তান পড়াশোনা করছে, আমার মা-বাবা অসুস্থ। আমরা সবাই একসঙ্গে থাকি। কিন্তু এত দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও আমি কাজ করার কোনো সুযোগই পাইনি, তাই আয়ের সুযোগ ছিল না।
একজন শিল্পীকে কালো তালিকাভুক্ত করাটা অন্যায় দাবি করে তিনি বলেন, এটা অবশ্যই অনৈতিক কাজ। একজন শিল্পীকে কালো তালিকাভুক্ত করার পেছনে কোনো সৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। কারণ আমরা যারা মিউজিক করি, সেই মিউজিকের কোনো বাউন্ডারি নেই। একজন শিল্পী প্রাণ খুলে গাইবেন। শ্রোতা-দর্শক মুগ্ধ হয়ে গান শুনবে। সেখানে কেন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হবে! তার মানে হলো, সেই শিল্পীর সামাজিক জীবনকেও দুর্বিষহ করা। একজন শিল্পীকে ব্ল্যাকলিস্টেড করা মানে সংস্কৃতিকেই ধ্বংস করে দেওয়া।
সামনে নতুন গান প্রসঙ্গে বেবী নাজনীন, আমি শুরু থেকেই সময়ের সঙ্গে চলতে ভালোবাসি। তাই এ সময়ের গীতিকার-সুরকারদের মাধ্যমে আমি নতুন গান করতে চাই। আমি নিজেও নতুন গান করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।