সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। এ লক্ষ্যে পরীক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহের জন্য ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তথ্য পাঠাতে বলা হয়। তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সাবজেক্ট ম্যাপিং সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিলে পরের এক মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং কীভাবে হবে সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে। যেগুলো পরীক্ষা দিয়েছে সেগুলোর মূল্যায়ন চলছে। সবকিছু মিলিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে আমরা প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে মাস খানেকের মধ্যে ফলাফল দেবো।’
বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য চাওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘কিছু প্রাইভেট পরীক্ষার্থীর তথ্য থাকে না। তাই যারা প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়েছে বা সমতুল্য পরীক্ষা দিয়েছে তাদের তথ্য চেয়েছি প্রতিষ্ঠান থেকে।’
যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়াদের তথ্য চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষদের কাছে তাতে বলা হয়, ১৯৯৬ সালের আগে এসএসসি পাস করা প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের এসএসসি পাসের নম্বরপত্রের ফটোকপি এবং ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের ফটোকপি অধ্যক্ষের মাধ্যমে সত্যায়ন করে শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষার্থীদের তালিকা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখা হতে সংগ্রহ করতে হবে।
এইচএসসি পরীক্ষার সমতুল্য সনদধারী পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও সমমান (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার অ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট/নম্বরপত্র (নম্বর/গ্রেড প্রদান পদ্ধতির প্রমাণের কাগজ পত্রসহ), ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সমতুল্য সনদ এবং ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশ পত্রের ফটোকপি অধ্যক্ষের মাধ্যমে সত্যায়ন করে শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।
যে সব পরীক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও সমমান এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে তাদের জেএসসি ও সমমান সমমান এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার অ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট এবং ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের ফটোকপি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অধ্যক্ষের মাধ্যমে সত্যায়ন করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।
সব পরীক্ষার্থীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর (শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালে প্রাপ্ত) অনলাইনে পাঠিয়ে এর প্রিন্টকপি কেন্দ্রে সংরক্ষণ করতে হবে এবং মূলকপি শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে। কোনও অবস্থাতেই ব্যবহারিক পরীক্ষার অজুহাতে পরীক্ষার্থীদের কলেজে আনা যাবে না।
অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক অনুপস্থিত ও বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীদের তালিকা শিক্ষা বোর্ডর পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।
অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক স্বাক্ষরলিপি এক কপি কেন্দ্রে সংরক্ষণ করে মূলকপি শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন থেকে সারা দেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। এবার সারা দেশে পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন।কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫, ২৮ জুলাই এবং ১ ও ৪ আগস্টের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। এরপর অবশিষ্ট পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি করে পরীক্ষার্থীরা। আর অটো পাস ঘোষণা না দিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানায় পরীক্ষার্থীরা। পরে অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো আর না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।