পাকিস্তানে তীব্র গরমে গত ছয় দিনে ৫৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মঙ্গলবারই ১৪১ জনের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন বলা হয়েছে, করাচির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ওপরে রেকর্ড হয়েছে, সেখানে অনুভূত তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
করাচির সিভিল হাসপাতালে রোববার থেকে বুধবারের মধ্যে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ২৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের প্রধান ডা. ইমরান সারওয়ার শেখ। এদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ডা. ইমরান সারওয়ার শেখ বিবিসিকে বলেন, আমরা যাদেরকে হাসপাতালে আসতে দেখছি তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৬০ থেকে ৭০ এর মধ্যে। তবে এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিল যাদের বয়স প্রায় ৪৫ বছর এবং এক দম্পতিও ছিল যাদের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে।
তিনি বলেন, যারা ঘরের বাইরে কাজ করছেন তাদের অনেকেই ডায়রিয়া বা তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন, আবার কারও কারও বমি হচ্ছে। লোকজনকে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি যে এ তীব্র তাপমাত্রায় প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে এবং হালকা কাপড় পরতে হবে।
তাপমাত্রার এই অসহনীয় পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে রীতিমত লড়াই করে যাচ্ছে করাচির সাধারণ মানুষ। তাপমাত্রার এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে ফ্যান এবং এসি। কিন্তু নিয়মিত লোডশেডিংয়ের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ফলে ফ্যান বা এসি চালানোও সম্ভব হচ্ছে না।
পাকিস্তানে লোডশেডিং একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। লোডশেডিংয়ের কারণে মুহম্মদ আমিন নামে এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মুহম্মদ আমিনের স্বজনরা জানিয়েছেন, তার ফ্ল্যাটে বার বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় তিনি হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারা যান। কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া না গেলেও তার পরিবারের ধারণা তীব্র গরমের কারণেই এমনটা হয়েছে।
দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে। এটি সারা বিশ্বে ঘটছে। করাচির এই তীব্র তাপপ্রবাহ আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
এদিকে, পাকিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও সাম্প্রতিক সময়ে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। ভারতের রাজধানী দিল্লিও তীব্র তাপপ্রবাহ প্রত্যক্ষ করে চলেছে। গত মে মাস থেকে সেখানে প্রতিদিনের তাপমাত্রাই ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে।