বিএনপি বারবার সন্ত্রাস ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, যারা গণতান্ত্রিক পন্থার ব্যত্যয় ঘটাতে সন্ত্রাস-সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার পাঁয়তারা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। এতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘মিথ্যা ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিথ্যাচার ও অপপ্রচার বিএনপির একমাত্র রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। তাদের মিথ্যাচার ও অপপ্রচার জনগণের সামনে প্রকাশিত হওয়ায় বিএনপি বারবার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়েও তারা মিথ্যাচার করছে। খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ শেষে বাসায় ফিরে গেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি রাজনৈতিক নয়, আইনি বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনি বিষয়ে বিএনপি আইনি প্রক্রিয়ায় মোকাবিলা না করে বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর অপচেষ্টা করছে। বিগত কয়েক বছর ধরে বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন করছে। কিন্তু সেই আন্দোলনে জনগণের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপি জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুকে প্রাধান্য না দিয়ে একটি অরাজনৈতিক বিষয়কে রাজনৈতিক ইস্যু করার অপচেষ্টা করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যখনই তাদের তথাকথিত আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামে, তখন তারা তাদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডার বাহিনীকে সক্রিয় করে। বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী ও ক্যাডার বাহিনীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অপচেষ্টা করে। আর এসব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা মিথ্যাচার-অপপ্রচারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ায়।
আওয়ামী লীগ কখনও অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় যায়নি মন্তব্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিএনপি ও তার দোসররা সর্বদা তৎপর থেকেছে। এটা বিএনপির জন্মগত রাজনৈতিক লিগ্যাসি। কারণ অবৈধ ও অসাংবিধানিক পন্থায় রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সামরিক স্বৈরাচারের হাতে প্রতিষ্ঠিত দল কখনও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারে না।
তিনি বলেন, বিএনপি যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করতে সক্ষম হতো বা তাদের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে পারতো, তাহলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সৎ সাহস দেখাতে পারতো। সেটা না থাকার কারণে বরাবরই বিএনপি সন্ত্রাস ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি কখনোই গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হয়ে উঠতে পারেনি। তাদের অবস্থান সব সময় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিপরীত মেরুতে। বিএনপি ও তাদের দোসররা তাদের সেই আদর্শগত অবস্থান পরিবর্তন না করায় আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিরাজমান সংকটের সমাধান দুরূহ। এই সংকট মোকাবিলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।