পানির ওপরে লম্বালম্বি দুটি বাঁশ এবং জাল ফেলে তার ওপর কচুরিপানার স্তূপ দিয়ে তৈরি করা হয় ভাসমান বেড। কিশোরগঞ্জে নরসুন্দা নদীর ওপর এভাবেই ভাসমান বেড তৈরি করে কচুরিপানা পচে শুকিয়ে যাওয়ার পর সামান্য মাটি ছিটিয়ে দিয়ে লাল শাক, পালং শাক, পেঁয়াজ, বেগুন, কপি, মিষ্টি কুমরা, টমেটোসহ বিভিন্ন শাক-সবজির আবাদ করা হয়।
বারি জাতের এসব সবজি ও মসলা স্থানীয় খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছেন কৃষকেরা। স্থানীয় কৃষকদের এ সাফল্য দেখে কেউ কেউ আবার কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেরাও এ পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেছেন।
কিশোরগঞ্জ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন বলেন, শুরুর দিকে এই চাষে কৃষকদের আগ্রহ কম থাকলেও বর্তমানে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তৈরিকৃত ছোট-বড় বেডে বিভিন্ন জাতের সবজি ও মসলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা।
প্রকল্প পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বললেন, আগাছা এবং কচুরিপানাকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে বিভিন্ন জাতের সবজি ও মসলা উৎপাদন করা যায় এ বিষয়ে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে বিভিন্ন সময় মাঠ দিবসের মাধ্যমে তাদের উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়েবাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম জানান, সারাদেশে প্রায় ২০ লাখ হেক্টর জায়গা জলাবদ্ধ থাকে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে এসব এলাকায় কৃষকেরা যেন সারা বছর ফসল উৎপাদন করতে পারে সেই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
দেশে ৭১টি উপজেলায় ইতিমধ্যে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা আবাদ করা হয়েছে। এর বিস্তার আরো ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়লে ২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ। এতে করে দেশের খাদ্য চাহিদা যেমন পূরণ হবে তেমনি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন কৃষক, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।