হিজাব আইন লঙ্ঘন করায় তুরস্কের পতাকাবাহী তার্কিশ এয়ারলাইনসের অফিস বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। সৌদি আরবভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৯ জুলাই) অভিযান চালিয়ে অফিসটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক প্রচার না পেলেও গতকাল বুধবার (১০ জুলাই) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি উঠে আসে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজও পুলিশের বরাতে সংবাদ প্রকাশ করেছে।
জানা যায়, পুলিশ সোমবার তার্কিশ এয়ারলাইনসের ওই অফিসে যায়। সেখানকার নারী কর্মীদের হিজাব পরতে না দেখে সতর্ক করে পুলিশ। তখন তাৎক্ষণিক হিজাব পরতে হুমকিও দেওয়া হয়। বলা হয়, নারীদের মাথা ঢাকতে অস্বীকৃতি ইরানের আইনের লঙ্ঘন। ওই সময় নারী কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় পুলিশ।
পরের দিন পুলিশ আবারও সেখানে যায়। এবার তাঁরা অফিসটি বন্ধ করে দেয়। তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, বুধবারও অফিসটি খোলার ব্যাপারে কিছু জানায়নি পুলিশ। এ ব্যাপারে তার্কিশ এয়ারলাইনসও কোনো বিবৃতি দেয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
ইরানে কর্মক্ষেত্রে ও ঘরের বাইরে হিজাব বা মাথা ঢাকা বাধ্যতামূলক। কর্মীরা হিজাব না পরায় গত কয়েক বছরে রেস্তোরাঁ, দোকান, ফার্মেসিসহ অসংখ্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নারীদের গ্রেপ্তার, জরিমানাসহ অন্যান্য শাস্তি হরহামেশাই দেওয়া হয়। এ নিয়ে দেশটিতে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। মাঝেমধ্যেই তা ফুঁসে উঠে বিক্ষোভে রূপ নেয়।
২০২২ সালে দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর এমনই এক বিক্ষোভ দেখে ইরান। সে সময় হাজারো মানুষ আন্দোলনে শামিল হন।
ইরান এবং তুর্কি বর্তমানে সবচেয়ে ভালো সম্পর্কের মধ্যে আছে। ২০২৩ সালে উভয়ের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫.৪ বিলিয়ন ডলার। তুরস্কও ইরানিদের জন্য একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গত বছর প্রায় ২.৫ মিলিয়ন ইরানি তুরস্কে ভ্রমণ করেছেন। এ ছাড়া অন্যান্য দূরপাল্লার ফ্লাইটের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় যেতে তার্কিশ এয়ারলাইনসের ভ্রমণের সময় কম হওয়ায় ইরানিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা রয়েছে।