তবে এমন একটি নথিতে তাদের স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যেখানে বলা রয়েছে, তারা ‘স্বেচ্ছায় ফিরতে সম্মত’। স্বাক্ষর আদায় করতে গিয়ে শারীরিক নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে পৃথিবীর সবথেকে বিপন্ন জনগোষ্ঠীর ওই মানুষেরা।
মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, এরইমধ্যে তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এমন অবস্থায় আটক শরণার্থীরা আতঙ্কিত অবস্থার মধ্যে দিন পার করছেন। কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশে ফিরে গেলে আত্মহত্যা ছাড়া কোনও পথ থাকবে তাদের।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, রোহিঙ্গারা ফাঁদে পড়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা সৌদি আরবের এই কর্মকান্ডের ব্যাপারে অবগত। তবে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে বাংলাদেশ ও সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়েছে মিডল ইস্ট আই।
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই’র দীর্ঘ চার মাসের অনুসন্ধানে জানা যায়, কোনও অভিযোগ ছাড়াই সৌদি আরবে বেশ কয়েক বছর ধরে আটক রাখা হয়েছে কয়েকশ রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুদের। এদের বেশিরভাগ ২০১১ সালের পর মিয়ানমারের নিপীড়ন এড়াতে ও জীবিকার তাগিদে তেল সমৃদ্ধ দেশটিতে পৌঁছায় ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে।
মিডল ইস্ট মনিটরের দাবি, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সৌদি সরকার। তাদের দাবি, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের সৌদি আরব সফর করার পরপরই তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মুখপাত্র আমিনা জুবারি বলেন, তারা সৌদি আরবের এই পদক্ষেপ সম্পর্কে অবগত। তারা এই বিষয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায় কোনও রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়নি। যারা অন্য দেশের ভুয়া পরিচয় দিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করেছে তাদের সেই দেশেই ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা তাদের।
১৯৫১ সালে রিফিউজি কনভেনশন অনুযায়ী কোনও শরণার্থী নীতি নেই সৌদি আরবেরর। ফলে শরণার্থীদের কাজের অনুমতি কিংবা চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হয় না দেশটির। দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে সৌদি আরবেই সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গার বসবাস। ১৯৭৩ সালে বাদশা ফয়সালের সময় মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়। সেদেশে জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গাদেরও ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা হয়।