আদালতের আদেশ ও কমিশনের অনুমোদনের কারণে গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব শফিউল আজিম। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসি ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা আরও সহজ করতে কাজ শুরু করেছে কমিশন। আর এনআইডি সেবার দায়িত্ব অন্য কোথাও চলে গেলে ভোটার তালিকা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, আদালতের আদেশ ও কমিশনের অনুমোদনের কারণে গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে।
১০ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ব্রিফিং দলটির আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, নির্বাচন কমিশন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল তুলে নেয়ায় রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে আইনি কোনো বাধা নেই।
ওইদিন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, গণসংহতি আন্দোলন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন সেই আবেদন নাকচ করে দেয়। নির্বাচন কমিশনের ওই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে নির্দেশ দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ইসি আবার আপিল দায়ের করে।
ওইদিন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, হাইকোর্টের রায় থাকা সত্ত্বেও এতদিন নিবন্ধন না দেয়ার পেছনে আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য ছিল। বঞ্চিত করা হয়েছিল তাদের। হয়রানি ও নিযার্তনের শিকার হতে হয়েছে তার রাজনৈতিক দলকে।
এর আগে ২০২২ সালের ৬ জুন জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বাধীন গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই আপিল তুলে নেয় ইসি।
প্রসঙ্গত: এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আইন অনুসারে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে ইসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ নির্দেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করে ইসি।
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইসিতে আবেদন করে গণসংহতি আন্দোলন। কিন্তু নিবন্ধন না দিয়ে দলটির পক্ষে করা আবেদন খারিজ করে দেয় কমিশন। এরপর ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন আবেদন খারিজ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পুনর্বিবেচনা করতে ইসিকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সাকি। হাইকোর্ট পক্ষে রায় দিলেও আপিলের সিদ্ধান্তের কারণে এতদিন ঝুলে ছিল নিবন্ধন।