ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে গণপরিবহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কসহ সিরাজগঞ্জের সব রুটে কচ্ছপ গতিতে চলছে গাড়ি। মাঝে মধ্যেই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ছে।
সোমবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে যানবাহনের চাপ বাড়ায় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের মুলিবাড়ী থেকে হাটিকুরুলল গোলচত্বর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গাড়ির কচ্ছপ গতি। এ ধীরগতি মাঝে মধ্যে যানজটে রূপ নিচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ঈদে ঘরে ফেরা ২১ জেলার মানুষ ও গরু ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে, হাটিকুমরুল-বনপাড়া রুটের গোঁজা ব্রীজ পর্যন্ত ও বগুড়া রুটের চান্দাইকোনা পর্যন্ত মহাসড়কে ধীরগতিতে যানবাহন চলছে।
এ সময় কথা হয় বাসচালক মিলন, নাবিল পরিবহনের চালক আলিম, হানিফ পরিবহনের সবুজ, সুপার ভাইজার আলহাজ, সামিউল, ট্রাক চালক শুক্কর আলী ও বক্কার হোসেনসহ অনেকের সঙ্গে।
তারা বলেন, মহাসড়কের নলকা ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে ওঠার আগেই গাড়ির গতি কমিয়ে দিতে হয় এবং সেতুর ওপর ২০-২৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালালে কেঁপে ওঠে।
চালকরা বলেন, গত ১০/১২ বছর ধরে এ সেতুর কারণে শত শত বার যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে। শুধু ঈদ নয়, যে কোনো সময় অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকলেই এখানে যানজট হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া আঞ্চলিক সড়কের ফুলজোড় নদীর ওপর এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর ১০ বছর পর ১৯৯৮ সালে আঞ্চলিক এ সড়কটি মহাসড়কে পরিণত হলেও এ সেতুটির কোনো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা হয়নি। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন করার পর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যানবাহন চলাচল করছে এ সেতুটি দিয়েই। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে যে কোনো যানবাহন এ সেতুটির ওপর উঠলেই সেতু কাঁপতে থাকে। যে কারণে এখানে এসে গাড়ির গতি কমিয়ে সেতুটিতে উঠতে হয়। মাঝে মধ্যেই সেতুর সংস্কার করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু সেটা বেশি দিন স্থায়ী হয় না। গত প্রায় ২০ দিন ধরে সেতুর ওপর কার্পেটিংয়ের কাজ করা হলেও এখনো জয়েনিং স্থানে রয়েছে খানা-খন্দ।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, নলকা সেতু এ মহাসড়কে যানজট ও দুর্ভোগের অন্যতম কারণ। একে তো সেতুতে উঠলে কম গতিতে গাড়ি চলে। তার ওপর সব সময়ই সেতুর একটি লেনও বন্ধ করে যানবাহন ছাড়া হয়। আজ সকাল থেকেই ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে। কখনো থেমে থেমে যানজট দেখা দিলেও পুলিশি হস্তক্ষেপে দ্রুতই নিরসন করা হচ্ছে।
হাটিকুরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী বলেন, হাটিকুরুমল-বনপাড়া মহাসড়কে ধীরগতি রয়েছে। পাবনা মহাসড়কে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক থাকলেও বগুড়া মহাসড়কের চান্দাইকোনা পর্যন্ত ধীরগতি রয়েছে। নলকার ঝুঁঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে কখনো কখনো যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।