স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার রায় দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। এখনও যারা বাকি আছে তাদের ফিরিয়ে আনতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকেও হত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছিল ২১ আগস্ট। শুধু ২১ আগস্ট নয়, তাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ জন্য বারবার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যাকে আমরা হারাতে চাই না।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা একের পর এক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সফল করছেন। বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন, আলোকিত বাংলাদেশ গড়েছেন তিনি। এত কিছুর পরও আমাদের কপালের দাগটি মোছার নয়। আমরা শপথ নিয়েছিলাম, এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করবো, আমরা তা পেরেছি। বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বলেই আমরা সেটা করতে পেরেছি।’
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে এনে রায় প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় হয়েছে। কারা কোথায় রয়েছে তাদের আইডেন্টিফাই করা হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে আনা হবে, অবশ্যই ফিরিয়ে আনা হবে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে এনে রায় প্রতিষ্ঠিত করবো। নতুন প্রজন্ম আর পথ হারাবে না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম মাথা উঁচু করে বলবে, আমরা বাংলাদেশি, আমরা বাঙালি– এটাই আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে এ দেশে স্বাধীনতার চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করতে চেয়েছিল। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসার পর দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সংগঠিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পাকিস্তান এখন বলছে, বাংলাদেশের কাছে শিখতে হবে কীভাবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়া যায়। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। স্মার্ট পুলিশিংয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন, জনবল দিয়েছেন, লজিস্টিক দিয়েছেন। জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যে জিরো টলারেন্স সেই নীতির আলোকে এ দেশ থেকে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ দমনের মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার একটি প্রচেষ্টা তৈরি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। পুলিশের মনোবল চাঙা রয়েছে। এ দেশের চাকা পেছনের দিকে ঘোরানোর যেকোনও চক্রান্ত যেকোনও প্রচেষ্টাকে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি সদস্য রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে। স্বাধীনতার চেতনা থেকে দেশকে পেছনে নেওয়ার প্রচেষ্টা বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য রুখে দিতে সচেষ্ট। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য যারাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করবে, তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।’
এ সময় ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য শেখ কবির হোসেন, ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক প্রশাসন কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতিরিক্ত আইজিপি স্পেশাল ব্রাঞ্চ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামসহ বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।