আনতারা রাইসা: আমরা অনেকেই হয়তো সিনেমা দেখার ভীষণ পোকা। সিনেমা এমন একটি বিনোদন মাধ্যম যা আমাদের দুই বা তিন ঘণ্টার জন্য একেবারে অন্য জগতে নিয়ে যায়। আমরা সেই ছবির নায়ক বা নায়িকার জায়গায় নিজেকে ভাবতে থাকি। কিছু ছবি আছে যেগুলো আমাদের মনে দাগ কেটে যায়। কিছু ছবি দেখে আমরা কেঁদে ভাসিয়ে দেই। কিছু ছবি আমাদের আরও বেশি রোমান্টিক করে তুলে। আবার কিছু ছবি এমন ও আছে যেটা দেখে আমরা হতবাক হয়ে যাই। এগুলো হচ্ছে শকিং কিছু ছবি। শকিং ছবি গুলো মূলত বিকৃত যৌনতা , ভায়লেন্স এবং পারভারশনের আদলে তৈরি হয়। এই ছবিগুলোতে দেখানো হয় মানব মনের অন্ধকার জগতকে। যেগুলো প্রকাশ করতে আমরা সচরাচর ভয় পাই। যেগুলো সমাজে ট্যাবু হিসেবে পরিচিত। এই ছবি গুলোর ভায়োলেন্সের আড়ালে আসলে থাকে কিছু ম্যাসেজ। এই ছবি গুলো আমাদের মনে এক গভীর ছায়া ফেলে। একে আমরা ঠিক পছন্দ ও করতে পারিনা আবার ভুলতেও পারিনা। আজকে এমনই পাঁচ হলিউড মুভি নিয়ে জানাবো আপনাদের –
১। la pianist
মাইকেল হানেকের পরিচালনায় একটি অসাধারণ ছবি এটি। একজন নিঃসঙ্গ পিয়ানো শিক্ষকের জীবনের গল্প এখানে তুলে ধরা হয়। ত্রিশর্ধ্ব এক তরুণী এরিকা যার রয়েছে পুরুষদের প্রতি খুব অনীহা। সেই তরুণী আবার মনো বিকার গ্রস্ত। তিনি পিয়ানো শিখেন এই শিক্ষকের কাছে যাকে নিয়ে ছবির মূল কাহিনী। পিয়ানো ক্লাস শেষে তাকে দেখা যায় তার অবদমিত বাসনা মেটাতে তিনি পর্ণ বুথে যান। গাড়িতে নর নারীর সঙ্গমের দৃশ্য তিনি দেখেন। তার সম্পর্ক তৈরি হয় এই শিক্ষকের সাথে । এভাবেই ছবির কাহিনী আগাতে থাকে। তবে ছবির শেষ দৃশ্যটি খুবই অদ্ভুত। কিছুটা সুরিয়ালিজমের আবহ তৈরি করা হয়েছে। এই অদ্ভুত ছবিটি আপনিও দেখে ফেলতে পারেন।
২। irreversible
পরিচালক গ্যাস্পার নয়েল এর এক আসামান্য ছবি এটি। বরাবরই তিনি খুব অন্যরকম ছবি নির্মাণ করেন। অন্যরকম বললে ভুল হবে। তার ছবি গুলো বেশিরভাগ সময়ে খুবই ডিস্টার্বিং হয় । বিভিন্ন ভাবে আলোর খেলা তার ছবিতে দেখা যায়। ডিস্টার্বিং হলেও ছবি গুলোর এক আলাদা সৌন্দর্য থাকে। এই ছবিও তেমনি। এখানে দেখা যাবে দশ মিনিটের ধর্ষণ এবং সমকামীদের যৌন দৃশ্য। সেই সাথে রয়েছে ভয়ংকর ভায়োলেন্স আর ট্র্যাজেডি। এই ছবির মূল বিষয় সময়। একটা রিভার্স ব্যাপার দেখানো হয়েছে। কখনও মনে হবে শুরুটাই শেষ আবার কখনও শেষ টাই শুরু। নরম চিত্তের হলে এই ছবি না দেখাই ভালো।
৩। Hostel
এলি রথের পরিচালনায় এই হোস্টেল ছবিটি যারা হরর ছবি ‘ saw’ দেখেছেন তাদের কাছে পরিচিত লাগতে পারে। ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটিতে দেখানো হয়েছে বিকৃত যৌনাচার। এই ছবির ভায়োলেন্স , অতিরিক্ত রক্তারক্তির দৃশ্য আপনাকে ডিপ্রেসিং করে দিবে। তবে ছবিটি দেখে মনে হয় পরিচালকের এমনই উদ্দেশ্য ছিল। এই ছবিতে দেখা যায় এক তরুণদের দলকে ইউরোপের একটি হোস্টেলে নির্মম ভাবে অত্যাচার এবং বিকৃত যৌনাচার এ বাধ্য করে এক বিকারগ্রস্ত ব্যবসায়ী। যারা খুব বেশি হরর ছবি পছন্দ করেন তারা এটি দেখতে পারেন।
৪। se7en
পরিচালক ডেভিড ফিঞ্চারের ভক্ত হলে এই ছবিটি অবশ্যই দেখতে পারেন । ছবিটির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে দুই গোয়েন্দা কে নিয়ে যারা একটি সিরিয়াল কিলারের কেস সমাধান করেন। এই সিরিয়াল কিলার আবার মানুষ খুন করে বাইবেলে বর্ণিত সাতটি ভয়ঙ্কর পাপ এর উপর ভিত্তি করে । সবচেয়ে ভয়ঙ্কর খুন হয় শেষ পাপ অর্থাৎ লালসা কে কেন্দ্র করে। এই ছবির প্রতিটা দৃশ্য আপনাকে ছবির শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে বাধ্য। এর শেষ ১০ মিনিট আমেরিকান ছবির সবচেয়ে ডিস্টার্বিং দৃশ্য গুলির মধ্যে একটি। তাই এখনও ছবিটি না দেখলে দেখে ফেলুন।
৫। Salo, 120 Days Of Sodom
১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটি সবচেয়ে শকিং ছবি। এই ছবিতে কিছু তরুণ তরুণীদের সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় এবং তারা সবসময়েই বিচিত্র কাজকর্ম করতে থাকে। ছবিটির দৃশ্য এতই বাস্তব মনে হয়েছিল যে কিছু দর্শক তো ভাবেন যে এই ছবির কয়েকটা দৃশ্য আসলেই বাস্তব। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিতর্কিত সিনেমা গুলির মধ্যে একটি। এই ছবির কাহিনীর সার সংক্ষেপে বলা আছে ‘ Four fascist libertines round up five teenaged boys and girls and subject them to 120 days of physical , mental and sexual torture.’
অনলাইন ডেস্ক /বিজয় টিভি