নির্বাচন ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও চাপে রাখতেই নতুন করে রাজপথে নামছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এরমধ্যেই জেলা সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছে দলটি। মূলত এর মাধ্যমে ভোটের মাঠের প্রস্তুতিও লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। তারা বলছেন, সরকারের কৌশলগত ভুলে নানা সংকট দেখা দিচ্ছে, যেটার সমাধান দ্রুত নির্বাচন।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরব বিএনপি। সব ধরনের কর্মসূচিতে এই দাবি উত্থাপন করতে ভোলেনি দলটির নেতারা। এরমাঝে জুলাই-গণঅভ্যূত্থানে নেতৃত্বে থাকা ছাত্রনেতাদের দল গঠনে আরও নড়েচড়ে বসেছে বিএনপি। ঘরোয়া আয়োজন ছেড়ে নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপে রাখতে নতুন করে রাজপথে ফিরেছে দলটি।
জানা যায়, চার দফা দাবিতে এরই মধ্যে ৮দিনে ৬৪ জেলায় সমাবেশের কর্মসূচি শুরু করেছেন। দাবির মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় করা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি থাকলেও বিএনপির মূল লক্ষ্য ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন।
বিএনপির এ কর্মসূচির ব্যাপারে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় রাখতে হলে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই, এটি তাদের উপলব্ধি করতে হবে। এখন এদেশে নানা ধরনের মতালম্বী, সুযোগ-সন্ধানীদের আগমন হয়েছে। সেসব ব্যাপারে জনগণকেও সচেতন করতে। সেই সাথে আমাদের কর্মীবাহিনী ও সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করা বা তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করা, যাতে সমাজবিরোধীরা জেঁকে বসতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার দোসরারা যাতে তাদের কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করতে না পারে। এছাড়াও আগস্ট চেতনাকে ক্ষতিগ্রস্ত না করতে পারে। সেজন্য আমরা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য এবং জনগণের কী ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা সেটিই আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি। নিবার্চন দিতে যত বিলম্ব হবে, এই সরকারও ততবেশি পিছিয়ে যাবে। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা কমে দূরে সরে যাবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষানুযায়ী যাতে দ্রুত এই সরকার জাতীয় নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ প্রদান করে। সেজন্য আমরা দাবি রেখে জনগণের সামনে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, অনেক আগে থেকেই বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছি। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এসব প্রক্রিয়া আপডেট করবো। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।
প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পর ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী বিএনপি। সেই লক্ষ্যে সাংগঠনিকভাবে দলের তৃণমূলকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করছে নীতি নির্ধারকরা। জেলাভিত্তিক সমাবেশের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব এবং সম্ভাব প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগত্যার পরীক্ষাও হবে বলে জানাচ্ছেন বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা।
উল্লেখ্য, জেলাভিত্তিক কর্মসূচি শেষে ফের বিভাগীয় সমাবেশ করার চিন্তা আছে বিএনপির। এক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম আর জুলাই বিপ্লবের ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠনের পর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে চায় দলটি।