রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকা থেকে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ দুইজন আটক করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) যৌথ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে তাদের আটক করে। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
আটক দুইজন হলেন, নরসিংদী পলাশ উপজেলার দাড়িহাওলা পাড়ার মো. আব্দুল মান্নান (৫০) এবং খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গজয়পুরের কাজী সোলাইমান হোসেন জনি (৩৬)।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এবং এনএসআই জানতে পারে ধানমন্ডি এলাকায় একটি প্রতারক চক্র সরকারি বিভিন্ন পদে চাকুরি দেওয়ার নাম করে নিরীহ জনসাধারণের নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য র্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় ভিক্টিমের দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এবং এনএসআই এর একটি যৌথ আভিযানিক দল ১৯ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাত ১০টার দিকে ঢাকা মহানগরীর ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের নিকট হতে ভূয়া নিয়োগপত্র এবং পরীক্ষার প্রবেশ পত্র জব্দ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা প্রতারনার বিষয়টি স্বীকার করে। তারা চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবকদের অভিভাবকদের অসহায়ত্ব ও অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে থাকে।
আসামি মোঃ আব্দুল মান্নান (৫০) চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবকদের অভিভাবকদের টাকার বিনিময়ে সরকারি বিভিন্ন পদে চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। প্রলোভনে রাজী হলে সে চাকুরী প্রত্যাশীর জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করে। তারপর চাকুরীপ্রার্থীর যোগ্যতা অনুযায়ী অভিভাবকদের বিভিন্ন সরকারি পদে চাকুরীর প্রস্তাব দেয়। চাকুরীপ্রার্থীর আর্থিক সক্ষমতা ও পদ অনুযায়ী টাকার পরিমান নির্ধারিত হয়। এভাবে একটি সরকারি পদে চাকুরী দেওয়ার জন্য তারা প্রার্থী প্রতি ০৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে থাকে।
অভিভাবকদের সাথে প্রাথমিক বোঝাপড়ার পর চুক্তি অনুযায়ী সে প্রথমে অর্ধেক টাকা নিয়ে নেয় এবং বাকী টাকা নিয়োগপত্র পাওয়ার পর দিতে হবে মর্মে চুক্তি হয়। এরপর সে প্রার্থীকে অপর আসামি কাজী সোলাইমান হোসেন জনির নিকট নিয়ে যায় এবং তিনি একজন উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। এরপর প্রার্থীর নিকট ডাকযোগে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রেরণ করা হয়। তারপর প্রার্থীকে নির্ধারিত তারিখে টাকাসহ চাকুরীতে যোগদান করার জন্য বলা হয়। প্রার্থীর নিকট হতে টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারকচক্র কৌশলে পালিয়ে যায় এবং প্রার্থী ও অভিভাবকদের সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এভাবে তারা অভিযোগকারী ভিক্টিমকে সরকারি দপ্তরে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরির দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। ভিক্টিম প্রতারক কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগপত্র পরিচিতজনদের প্রদর্শন করলে বুঝতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া। এরপর এক ভুক্তভোগী র্যাব-৩ কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগকারী ভিক্টিম ছাড়াও প্রতারক চক্র বিভিন্ন সরকারি পদে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ১৫ জন ভিক্টিমের নিকট হতে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।