মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) দখল করা বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) চৌকি ও ক্যাম্পসহ গ্রামগুলো পুনরুদ্ধার করতে রাখাইনে দফায় দফায় বোমা হামলা, মর্টারশেল ও গুলি চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। আজ বুধবার সীমান্তের ওপারে দেশটির সেনাবাহিনীর বিমান ও হেলিকপ্টারও উড়তে দেখা গেছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ও রাতে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের ওপার থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে। রাতে বিরতির পর আজ সকালে সীমান্তের এপার থেকে আবার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ফলে সীমান্তের কাছে বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাটছে না।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, হ্নীলা সীমান্তের ওপারে রাখাইনে থেকে দফায় দফায় ছোড়া গোলা ও মর্টারশেলের বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারের সীমান্তে থাকা বাড়ি-ঘর কেঁপে উঠছে। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়েছি আরাকান আর্মির দখল করা বিজিপির চৌকি-ক্যাম্প ও গ্রামসহ মংডুর রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপসহ রাখাইনের আশপাশের এলাকা পুনরুদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করছে দেশটির সেনাবাহিনী।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, মিয়ানমার রাখাইনে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারের টেকনাফ পৌর শহর, দমদমিয়া, জাদিমোরা, হ্নীলা, মৌলভী পাড়া, খারাংখালি উনচিপ্রাং, হোয়াইক্যং এলাকার মাটি কাঁপছে। এ ঘটনায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটান সীমান্তের বসবাসকারীরা। এমনকি স্থানীয়রা সাগরে ও চিংড়ি-কাঁকড়ার ঘেরসহ ফসলি জমিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পালংখালি-থাইংখালি সীমান্তে থেমে থেমে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের শব্দ। তবে আগের তুলনায় কম। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে যেকোনো মুহূর্তে ওপার থেকে গোলা এসে পড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে চলা সংঘাতের কারণে এপারের টেকনাফ সীমান্তের কাছে বসবাসরতদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত এলে আমরা সে অনুযায়ী কাজ করবো। তবে কোনো রোহিঙ্গা যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য সীমান্তে বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের টহল জোরদার রয়েছে।