হঠাৎ বৃষ্টি, হঠাৎ রোদ— এমন আবহাওয়া চলতে থাকলে আগামীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। গ্রীষ্মকালের এ সময়টা ডেঙ্গুরোগ বাড়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানান মেয়র আতিক।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগ এবং আরবান আইএনজিও ফোরাম বাংলাদেশ’র যৌথ উদ্যোগে ‘৮ম আরবান ডায়ালগ-২০২৪’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় মেয়র আতিক বলেন, আগামী কয়েক মাস এমন রোদ-বৃষ্টি থাকবে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ধরনের আবহাওয়া এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উপযোগী। এ সময় সবাইকে বেশি করে সতর্ক থাকতে হবে।
রাজধানীর খালগুলোতে মশার চাষ করা হয় উল্লেখ করে আতিক বলেন, খালে এমন কোনও ময়লা নেই যা ফেলা হয় না। বিগত কয়েক মাসে রাজধানীর খাল পরিষ্কার করে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে। ফ্রিজ, টিভি, জাজিম, বাথটাব— এমনকি নষ্ট রিকশা পর্যন্ত খালে পাওয়া গিয়েছে। এসব খালে অভিজাতদের বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। বর্জ্য ফেলে বদ্ধ হয়ে যাওয়া খালে জন্ম নেয় এডিস মশা, যার ফলে দেখা দেয় ডেঙ্গুর।
বাসা-বাড়িতে পানি জমা করে রাখা হয় যাতে জন্ম নেয় এডিস মশা। দুই বিল্ডিংয়ের মাঝে ময়লা ফেলে, পানি জমিয়ে এডিস মশার বংশবৃদ্ধির ব্যবস্থা খোদ নগরবাসী করছেন উল্লেখ করে উত্তরের মেয়র বলেন, এডিস মশার বংশবৃদ্ধিতে জেনে বা না জেনে যারা সহযোগিতা করছেন; বিগত সময় থেকে এখন পর্যন্ত তাদের ৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অথচ জরিমানা করার পরেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি।
নগরবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আতিক বলেন, দুই বিল্ডিংয়ের মাঝে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে। খালে যাতে ময়লা ফেলতে না পারে সেজন্য ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আপনারা বাড়ির সামনে ময়লা না ফেলে প্রত্যেকে ফাঁকা জায়গায় পাঁচটি করে গাছ লাগান। এতে করে একদিকে পরিবেশ ঠিক থাকবে, অন্যদিকে নগরবাসী সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারবে।
জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, জলবায়ু প্রতিকূলতার কারণে শুধু বন্যা-ঘূর্ণিঝড় না নানান ধরে নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যাদের মধ্যে ডেঙ্গু অন্যতম। এভাবে অসহনীয় গরম আবার হঠাৎ করে বৃষ্টির মতো আবহাওয়ায় নতুন নতুন রোগের জীবাণু তৈরি হবে। জলবায়ু সংক্রান্ত এসব ভেক্টর বর্ন ডিজিস মানুষের জীবনযাত্রার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
এসব রোগ থেকে বাঁচতে চাইলে সবুজায়নের বিকল্প নেই জানিয়ে ঢাবি উপাচার্য বলেন, হিট ওয়েভ থেকে রক্ষা পেতে চাইলে পরিকল্পিতভাবে নগরায়ন করতে হবে। যদি ঢাকার বনায়ন ৩০ শতাংশ বাড়ানো যায় তাহলে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে আসবে।