আনতারা রাইসা :করোনার এই কঠিন সময়ে আমরা সকলেই ঘরে বসে থেকে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। কেউ কেউ আমরা মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। ফেসবুক কিংবা টেলিভিশন খুললেই এখন শুধু মানুষের মৃত্যুর মিছিল দেখে আপনি নিশ্চয়ই খুব হতাশ হয়ে পরেছেন? এজন্যই এখন দরকার একটু ভিন্ন ধারার সংবাদ।
ঘরে বসে আপনি বিভিন্ন তারকাদের মজার মজার গল্প শুনে নিজের চিন্তাকে একটু ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে পারেন। এতে করে আপনার মন ও ভালো থাকবে।
বিনোদন জগতের বাইরের খবর তো আমরা সবাই জানি। কখন কোন ছবি মুক্তি পাচ্ছে , কোন অভিনেতার কোন অভিনেত্রির সাথে প্রেমের গুঞ্জন চলছে। কিন্তু এর ভিতরেও কিন্তু আরো অনেক ধরণের ঘটনা ঘটে থাকে। যা হয়তো ওই ভাবে মিডিয়াতে আসেনা। এবার সেই গল্পগুলোই আপনাদের শোনাব।
শ্রীদেবী নয়, ‘চাঁদনী হওয়ার কথা ছিল রেখার
যশরাজ ফিল্মস বলিউডে খুবই নামকরা প্রোডাকশন হাউজ। যশ চোপড়ার এই হাউজ বলিউডে উপহার দিয়েছে অনেক জনপ্রিয় ছবি। তেমনি ১৯৮৯ সালের খুবই পরিচিত রোম্যান্টিক মিউজিকাল ফিল্ম চাঁদনী। এই ছবির গানগুলো আজও দর্শকদের মনে রয়ে গিয়েছে। তবে এই ছবি বানাতে গিয়ে পরিচালক যশ চোপড়া যে কত বাধার মুখে পরেছেন সেই গল্প হয়তো অনেকেরই অজানা।
এমন একটা সময়ে এই ছবির কাজ শুরু হয়েছিল যখন বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করে তার প্রতিটা ছবি। তখন যশ ফিল্ম শুধুই একশন ছবি করত। তাই এই ঘরানার ছবি একটু সুইসাইড আটেম্পট নেয়ার মতনই ঘটনা ছিল চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের কাছে। শুধু তাই নয় এই ছবিটা নারী নির্ভর ছিল যা সেই কালে একটু অদ্ভুত ব্যাপার।
যশ চোপড়া যখন প্রথম এই ফিল্ম করার কথা ভেবেছিলেন, ‘চাঁদনী’র চরিত্রে রেখাকে কাস্ট করার কথা প্রথম মাথায় এসেছিল তাঁর। কিন্তু রেখা অন্য ফিল্ম নিয়ে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে, যশের প্রস্তাবে রাজি হতে পারেননি।জানা যায়, রেখার বদলে কাকে এই ভূমিকায় মানাবে, তা নাকি কিছুতেই ভেবে উঠতে পারছিলেন না যশ চোপড়া। তখন রেখাই তাঁর কাছে শ্রীদেবীর নাম প্রস্তাব করেন।
এই ফিল্মে বিনোদ খন্নার বিপরীতে জুহি চাওলা অভিনয় করেছিলেন। অনেকেই জানেন না, জুহি চাওলার আগে মাধুরী দীক্ষিতের কাছে গিয়েছিলেন যশ চোপড়া। মাধুরী তখন হিট অভিনেত্রী হওয়ায় ফিল্মে তাঁর ছোট রোল পছন্দ হয়নি। তার পর জুহির কাছে যান যশ চোপড়া। জুহি চাওলা ফিল্মটা করতে রাজি ছিলেন একটাই শর্তের সাপেক্ষে। যশ চোপড়াকে তাঁর পরবর্তী ফিল্মে জুহি চাওলাকে লিড রোলে নিতে হবে। উপায় না পেয়ে যশ তাতে রাজিও হয়ে যান।
এই ফিল্মের কিছু শুটিং সুইত্জারল্যান্ডে হয়েছিল। তার পর থেকে সেই শুটিং স্পট এতটাই জনপ্রিয় হয়ে যায় যে, বলিউডের প্রচুর ফিল্ম সুইত্জারল্যান্ডে হতে শুরু করে। এমনকি সেখানে যশ চোপড়ার একটা মূর্তিও বানানো হয়েছে।
এভাবেই নানা চড়াই উতরাই পার হয়ে তৈরি হয়ে জনপ্রিয় ছবি চাঁদনী।
গোবিন্দ ও রানী কথনঃ
গোবিন্দকে তো বলিউডে সবাই প্রায় এক নামে ছিনে।তার জনপ্রিয়তা শুধু কিন্তু তার অভিনয়ের জন্য নয়, অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর কৌতুকরস এবং নাচের স্কিল-এর জন্যও তিনি ভক্তদের খুব প্রিয় ছিলেন। তার এই বন্ধুত্বপুর্ন ব্যবহারের জন্য তার সহ অভিনেত্রিরা সহজেই তার প্রেমে পরে যেতেন। ১৯৮৭ সালে তিনি বিয়ে করেন সুনিতা আহুজাকে।
কিন্তু সুনীতা একাই গোবিন্দার জীবনে আসেননি। বলি ইন্ডাস্ট্রির আরও বেশ কিছু সহ অভিনেত্রীর সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে পড়েছিল। তবে সবচেয়ে বেশি যে নায়িকার সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে পড়েছিল এবং যার জন্য গোবিন্দার বিবাহিত জীবনও ভাঙনের মুখে চলে এসেছিল, তিনি কে জানেন?
নব্বইয়ের দশকের ‘হদ কর দি আপনে’ সহ অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়। রানি মুখোপাধ্যায় আর গোবিন্দার জুটি ছিল সুপার হিট। রানী তখন সবেমাত্র বলিউডে পা দিয়েছেন। শুটিং সেটে গোবিন্দর কৌতুক ও বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারের জন্য সহজেই রানির ভালো লেগে যায় গোবিন্দকে। এই ভালো লাগা কতটুকু গড়িয়েছে এটি বোঝা যায় কিছুদিন পরেই।
শুটিং এর সেটে এবং বাইরে তারা সবসময়েই তারা একসাথে থাকতেন। তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে কানাঘুষো ছিলই। কিন্তু গোবিন্দা ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী সুনীতাকে নিয়ে ভীষণ সুখি ছিলেন। তবে ভুল ভাঙে গোবিন্দার একটি ভুল পদক্ষেপে। এক বার এক সাংবাদিক রানি মুখোপাধ্যায়ের সাক্ষাত্কার নিতে সকাল সকাল তাঁর বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। সে সময় গোবিন্দাও নাকি ছিলেন রানির বাড়িতে। নাইট সুট পরে তাঁকে দেখতে পান ওই সাংবাদিক। এর পরই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে বিস্তর চর্চা শুরু হয়।
তবে এই চর্চা আর বেশিদূর গরায়নি। কারন তারা সম্পর্ক নিয়ে খুব বেশি লুকোচুরি না খেললেও কখনই তেমন ভাবে মুখ ও খুলেননি। অপরদিকে গোবিন্দ ও তার বিবাহিত জীবনে সুখে ছিলেন দেখে এই সম্পর্ক পরে একসময় বিচ্ছেদে রূপ নেয়।
এর অনেক বছর পর ২০১৪ সালে চলচ্চিত্রকার আদিত্য চোপড়াকে বিয়ে করেন রানী মুখোপাধ্যায়।
তথ্যসুত্রঃ আনন্দ বাজার
অনলাইন নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি