মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিল না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউডের শক্তিমান অভিনেতা ইরফান খান। মৃত্যুর আগে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে রেখে গেছেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবনে প্রযোজক-লেখক সুতপা সিকদারের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন ইরফান খান। এ সংসারে তার দুই পুত্রসন্তান। যাদের একজনের ইতোমধ্যেই বলিউডে অভিষেক হয়েছে।
মৃত্যুর আগে স্ত্রী-পুত্রদের জন্য কত টাকার সম্পত্তি রেখে গেছেন ইরফান খান? সম্প্রতি ইন্ডিয়া টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, প্রতি সিনেমার জন্য ১৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিতেন ইরফান খান। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য ভালো অঙ্কের অর্থ নিতেন। পাশাপাশি প্রতি বিজ্ঞাপনের জন্য ৪-৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিতেন। এছাড়াও ১১০ কোটি রুপি ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।
মুম্বাইয়ে ইরফান খানের বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে, জুহুতে তার একটি ফ্ল্যাটও আছে। অন্য তারকাদের মতো ইরফান খানের গাড়ির প্রতি আলাদা ভালোবাসা ছিল। তার সংগ্রহে ছিল টয়োটা সেলিকা, বিএমডব্লিউ, মাসরাতি কোয়াট্রোপোর্টে, ওডি ব্র্যান্ডের গাড়ি। এসব গাড়ির মোট মূল্য ৩-৫ কোটি রুপি। যাহোক, ইরফান খানের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩২১ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৫৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি)।
গত ৭ জানুয়ারি ছিল ইরফান খানের জন্মদিন। এ উপলক্ষে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে সাক্ষাৎকার দেন ইরফান খানের স্ত্রী সুতপা সিকদার।
আলাপচারিতায় তিনি জানান, ইরফান খান মহারাষ্ট্রে একটি আমের বাগান প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তা ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ফলের বাগান গড়ারও পরিকল্পনা ছিল তার। কৃষকদের আধুনিকভাবে গড়ে তোলার ইচ্ছা ছিল ইরফানের।
১৯৮৮ সালে ‘সালাম বম্বে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে ইরফান খানের। মীরা নায়ার পরিচালিত এই সিনেমা একাডেমি পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিল। ৩২ বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে দেশ-বিদেশের ৯৪টি সিনেমায় অভিনয় করেন এই অভিনেতা।
ইরফান খানের বিচরণ শুধু বলিউডে সীমাবদ্ধ ছিল না, সমসাময়িক বিশ্ব চলচ্চিত্রের প্রিয় মুখও ছিলেন তিনি। ‘স্লামডক মিলিয়নিয়র’, ‘লাইফ অব পাই’, ‘সালাম বম্বে’, ‘মকবুল’, ‘লাঞ্চবক্স’, ‘পিকু’, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’, ‘অ্যামেজিং স্পাইডার ম্যান’-এর মতো কালজয়ী সিনেমা উপহার দেন তিনি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কারের পাশাপাশি ২০১৩ সালে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন ইরফান।