সাহাব জাদে ইরফান আলি খান। ১৯৬৭-র ৭ জানুয়ারি জয়পুরে একটি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বড় হয়ে ইরফান খান প্রথমে ক্রিকেটার হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তার পর ছোটখাট ব্যবসার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। কিছু হচ্ছে না দেখে শুরু করেন এম.এ কোর্স।
১৯৮৪ সালে এম.এ কোর্সে পড়াশোনা চলাকালীন সময়েই ইরফানের কাছে আসে এক সুবর্ণ সুযোগ। তিনি নিউ দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতে পড়াশোনার জন্য পেয়ে যান স্কলারশিপ । সেখান থেকে তিনি ড্রামাটিক আর্টসে ডিপ্লোমা করেন।
ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে পাশ করার পর মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান ইরফান। প্রথমদিকে টিউশন করিয়ে এবং এসির মেকানিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে তাকে।
অভিনেতা হিসেবে মুম্বায়তে টেলিভিশন সিরিয়াল দিয়ে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন ইরফান। একে একে অভিনয় করেন চাণৌক্য, সারা জাহা হামারা সহ অসংখ্য টিভি সিরিয়ালে।
১৯৮৮ মিরা নায়ারের পরিচালনায় সালাম বোম্বে ছবিতে অভিনয়ে করেন তিনি। তারপর থেকে সিনেমাতেই এগিয়ে যেতে থাকে তার ক্যারিয়ার।
পান সিং তোমার ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি পান ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়াও বিল্লু বারবার, পিকু, দ্য লাঞ্চ বক্স, তালভার ছবিতে অভিনয় করে তিনি তার অভিনয় গুণ চিনিয়েছেন।
তার অভিনয় দক্ষতার কথা ছড়িয়ে গিয়েছিল হলিউডেও। ইরফান অভিনয় করেছেন লাইফ অব পাই, ইনফারনো, অ্যামেইজিং স্পাইডারম্যানের মতো হলিউডের জনপ্রিয় ছবিতে। বাংলাদেশে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ডুব ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
ব্রেনে টিউমার নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে লড়াই করছিলেন ইরফান খান। সুস্থ হয়ে ‘আংরেজি মিডিয়াম’ ছবির মধ্যে দিয়ে কামব্যাকও করেছিলেন। মঙ্গলবার মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে কোলন ইনফেকশন নিয়ে ভর্তি হন ইরফান।
বুধবার সকালে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। দুই ছেলে আর আর স্ত্রীকে রেখে ৫৩ বছর বয়সে ইরফান পাড়ি দিলেন নতুন দুনিয়ায়।
নাসির উদ্দিন শাহ্, নাওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকি, নানা পাটেকারদের সারির একজন পুরনাঙ্গ অভিনেতা হারাল বলিউড। খশে পড়া এই তারকা তাঁর অভিনয় গুণের জন্য সারা জীবন আলো দেবেন ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে। তার মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বলিউডের নামজাদা সব তারকারা।
নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি