বরিশালে নির্বাচনী জনসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ভাঙা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৬ লেনের রাস্তা করে দেবো। এই বরিশালে আর কষ্ট আর থাকবে না। বরিশাল বিভাগ ছিলো অন্ধকার। আওয়ামী লীগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দিয়েছে। ৮ লাখ ৪১ হাজার ৬’শ ২৩ জন হতদরিদ্রকে বিনামূল্যে ঘর দিয়েছি। এই বাংলাদেশে কেউ হতদরিদ্র থাকবে না।’
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অনুষ্ঠিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট দেশ হবে। তাই দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে দেশকে স্মার্ট দেশ করবো। অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আজকে ৬ লাখ ৮০ হাজার ফিল্যান্সার ঘরে বসে আয় করছে। এজন্য ১০৯টি আইটি পার্ক করেছি। প্রত্যেক স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করেছি। ভোলার গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় নিয়েছি। ভবিষ্যতে এই গ্যাস বরিশালের শিল্পাঞ্চলে দেওয়া হবে।’
এ সময় তিনি তরুণসহ জনসাধারনের কাছে ভোট প্রার্থনা করে বলেন, ‘ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। এই নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।’
এর আগে তিনি ঢাকা থেকে সড়কপথে বরিশাল পৌঁছান। এরপর তিনি ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানের মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠেন। জনসভা উপলক্ষে চার স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। জনসমাবেশে যোগদিতে দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলা-উপজেলা থেকে দলীয় নেতাকর্মীসহ জনসাধারণের স্রোত তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জনসাধারণ বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, রঙ-বেরঙের টি শার্ট, ক্যাপ পরে সড়ক ও নৌপথে এসেছেন। বঙ্গবন্ধু উদ্যানের আশপাশের সব সড়ক লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একনজর দেখতে সকাল থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা নগরীতে অবস্থান নেন। এদের মধ্যে নারী, তরুণ-তরুণীর উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। তারা হাতে লাল-সবুজ পতাকার সঙ্গে রং বেরঙের পোশাক পড়ে নগরীতে প্রবেশ করায় উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে বরিশাল।
ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। মাঠে জায়গা না পেয়ে নেতাকর্মীসহ জনসাধারণ আশাপাশের সড়ক ও খালি জায়গায় অবস্থান নিয়েছে। জনসভাকে কেন্দ্রে করে দলীয় প্রতীক নৌকার প্রতিকৃতি নিয়েও এসেছেন অনেকে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানাসহ কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা।
পটুয়াখালীর শ্রমজীবী আক্কাস উদ্দিন বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখতে এসেছি। তার শাসন আমলে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। তাই নিজে থেকে এই জনসভায় এসেছি।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নগরজুড়ে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, টহল পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মাঠে রয়েছে। সাদা পোশাকে মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। মাঠ ও আশপাশে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। গোটা নগরী নিরাপত্তার চাঁদরের ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘জনসভায় যোগ দিতে আসার সময় ও ফিরে যাওয়ার সময় জনসাধারণ যাতে কোন ভোগান্তিতে না পড়েন সেজন্য পর্যপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যানজট এড়াতে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মাঠে রয়েছে। নৌপথে টল দিচ্ছে নৌপুলিশের সদস্যরা।’