বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করাটা ছিল একটি ঐতিহাসিক বিষয়। ১৯৫৭ সালের ৪ জুন বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হওয়ায় সরকার ৪ জুন জাতীয় চা দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চা বোর্ডের চেয়াম্যানের দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু চা শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন এবং চা শ্রমিকদের কল্যাণে অনেক কাজ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতার বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে চা উৎপাদন বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৯৯৬ সালে দেশের উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়ে চা উৎপাদন শুরু হয়েছে। সেখানে চা উৎপাদন করে চাষীগণ লাভবান হচ্ছেন। ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটেও চা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে সমতল ভূমিতেও চা উৎপাদন হচ্ছে এবং দিন দিন চা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুক্রবার ঢাকায় ওসমানী মিলনায়তনে ‘প্রথম জাতীয় চা দিবস-২০২১’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চা বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্য। নতুন চা উদ্ভাবন করে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তবমুখী বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে, এখন গ্রামের মানুষও নিয়মিত চা পান করেন।
তিনি বলেন, চায়ের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিস্তারিত কর্মসুচি গ্রহণ করেছে। চায়ের উৎপাদন বাড়িয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। ২০১৯ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে চায়ের উৎপাদন ছিল ৯৬ দশমিক ০৭ মিলিয়ন কেজি। এর মধ্যে রপ্তানি হয়েছে শূন্য দশমিক ৬০ মিলিয়ন কেজি চা। ২০২০ সালে উৎপাদন ছিল ৮৬ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন কেজি, আর রপ্তানি হয়েছে ২ দশমিক ১৭ মিলিয়ন কেজি চা। অথচ ২০১১ সালে দেশের মোট চা উৎপাদন হতো মাত্র ৫৯ দশমিক ১৩ মিলিয়ন কেজি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশে চায়ের উৎপাদনও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সবধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। চা শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা অনেক সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির আরও সুযোগ রয়েছে। চা শিল্পের উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করলে চা উৎপাদন বাড়বে। এতে করে চা শিল্প আরো বিকশিত হবে।