মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি বছরের শেষ নাগাদ ইরাকে ‘যুদ্ধের দায়িত্ব সমাপ্ত’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ওয়াশিংটন সফররত ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাজেমির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সোমবার হোয়াইট হাউজে এ ঘোষণা দিয়েছে তিনি।
ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার মাধ্যমে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের শুরু করা আরেকটি যুদ্ধের অবসান ঘটালেন জো বাইডেন। এই বছর তিনি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল সোমবার (২৬ জুলাই) ওয়াশিংটন সফররত ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাজেমির সঙ্গে বাইডেনর সাক্ষাতের পর দুই নেতা এক যৌথ বিবৃতিতে ‘২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর ইরাকে আর কোনো মার্কিন সেনা যুদ্ধের ভূমিকা পালন করবে না’।
যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করে বাইডেন বলেন, ‘২০২১ সাল শেষে মার্কিন সেনারা ইরাকি সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করার দায়িত্ব পালন করবে, কিন্তু তারা সরাসরি কোনো যুদ্ধে অংশ নেবে না।’
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ইরাকের মাটিতে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের সাবেক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও ইরাকের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাশদ আশ-শাবির সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু মাহাদি আল-মুহান্দিসকে হত্যার পর ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে গণদাবিও দিন দিন জোরালো হয়েছে।
অবশ্য ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। পরিবির্তিত পরিস্থিতিতে দেশটিতে নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হয় এবং জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের উত্থান ঘটে। ২০১৪ সালে আবারও দেশটিতে সেনা মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময়ে দেশটির একটি বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ শুরু করে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট। ২০১৭ সালে আইএস-এর পতন ঘটলেও গোষ্ঠীটির অবশিষ্টাংশ নির্মূলে দেশটিতে থেকে যায় মার্কিন বাহিনী।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রী কাজেমি রোববার রাতে আমেরিকা পৌঁছান।এর আগে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। যার প্রেক্ষিতে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সময়সীমা ঘোষণা হবে চলতি সপ্তাহে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর।