ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি রাফায় গিয়ে আশ্রয় নিয়ে আছে। রাফায় ইসরায়েলি হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত, ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফার তিনটি বাড়িতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত ও আরও বহু ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।
সোমবার গাজার চিকিৎসা কর্মীরা একথা জানালেও ভূখণ্ডটি শাসনকারী হামাসের গণমাধ্যম নিহতের সংখ্যা ১৫ বলে জানিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান, ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো উত্তরাঞ্চলে গাজা শহরের দু’টি বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে, এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে।
মাসের পর মাস ধরে চলা ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি রাফায় গিয়ে আশ্রয় নিয়ে আছে। সাত মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধের প্রথমদিকে রাফাকে নিরাপদ শহর ঘোষণা করে গাজার অন্যান্য অংশের ফিলিস্তিনিদের সেখানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েল। এখন সেই রাফাকেই লক্ষ্যস্থল করে তুলছে তারা।
ইসরায়েলের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে হামাসের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে মিশর। কায়রোতে মিশরীয় ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে হামাসের প্রতিনিধিদের ওই আলোচনা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে রাফায় এ হামলা চালাল ইসরায়েল।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের যোদ্ধারা নজিরবিহীন হামলা চালায়। ওই হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে বলে ভাষ্য ইসরায়েলের। ইসরায়েলের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে প্রাণঘাতী একক হামলা। এ হামলা চলাকালে হামাসের যোদ্ধারা প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশিকে ধরে গাজায় নিয়ে বন্দি করে রাখে।
এর জবাবে ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার ঘোষণা দেয়। ওই দিন থেকেই তারা হামাস শাসিত গাজায় ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে। তারপর থেকে প্রায় সাত মাস ধরে চলা ইসরায়েলে অবিরাম হামলায় গাজায় ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনির মধ্যে অন্তত ৬৬ জন গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় প্রায় পুরো গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং ভূখণ্ডটির ২৩ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে।