উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার (১৯ জুন) পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এশিয়ায় এটি রাশিয়ার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কিম এটিকে ‘জোটের মতো’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রাশিয়ার সোভিয়েত পরবর্তী নীতি পুরোপুরি পাল্টে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন পুতিন। ২০০০ সালের জুলাই মাসের পর এটিই পুতিনের প্রথম পিয়ংইয়ং সফর। ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমাদের ক্রমবর্ধমান সমর্থনের মুখে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার পথে হাঁটছেন পুতিন। তিনি বলেছেন, পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সামরিক ও কারিগরি সহযোগিতা উন্নত করতে পারে মস্কো।
দুই নেতা বৈঠক শেষে একটি বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। পুতিন বলেছেন, দুই দেশের যেকোনও একটি আক্রমণের শিকার হলে এতে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষার ধারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যে বিস্তৃত অংশীদারিত্ব চুক্তি আজ স্বাক্ষরিত হলো এতে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি চুক্তি স্বাক্ষরকারী কোনও দেশ আক্রমণের শিকার হলে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানসহ দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির লঙ্ঘন। এর আলোকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক-কারিগরি সহযোগিতার উন্নতি বাদ দিচ্ছে না রাশিয়া।
উত্তর কোরিয়াকে সমর্থনের জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিম জং উন। ১৯৪৮ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনে দেশটি গঠিত হয়েছিল।
চুক্তিতে প্রকৃত অর্থে কী লেখা রয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এতে উত্তর-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের দেশ উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষায় নাটকীয় পরিবর্তন থাকতে পারে। উত্তর কোরিয়াকে প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতি যদি রাশিয়া দিয়ে থাকে তাহলে কোরীয় উপদ্বীপের উত্তেজনা নতুন মাত্রা পাবে। কারণ দক্ষিণ কোরিয়াকে সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
চীনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়ার সঙ্গে যে সক্রিয়া সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তা নেই বেইজিংয়ের সঙ্গে। এই বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার প্রধান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উপকারকারী চীনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
পুতিন ও কিমের ঘনিষ্ঠতা যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির এশীয় মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।