প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদেশ অনুযায়ী বিদেশে যাবতীয় সহায়তা ও অনুদান স্থগিত রেখেছে ওয়াশিংটন; ফলে জাতিসংঘকেও বিভিন্ন খাতে বাজেট কাটছাঁট করতে হচ্ছে এবং এর ফলে বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হাই কমিশনার ও প্রধান নির্বাহী ফিলিপ্পো গ্রান্ডি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এ উদ্বেগ জানিয়েছেন। শুক্রবার এক্সে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের একটি ছবি পোস্ট করে গ্রান্ডি বলেন, “রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান বাংলাদেশের সরকারের জন্য একটি বিশাল কাজ ছিল। এখন আমরা যা আশঙ্কা করছি, তা যদি সত্যি হয়, দাতাদের সহায়তাপ্রবাহ নাটকীয়ভাবে কমে যায়— তাহলে বাংলাদেশের সরকার, সহায়তা সংস্থা এবং রোহিঙ্গাদের ওপর অভূতপূর্ব চাপ সৃষ্টি হবে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা ক্ষুধা, রোগব্যাধী এবং নিরাপত্তাহীনতার শিকার হবে।”
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে একযোগে বোমা হামলা ঘটায় সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। সেই হামলার প্রতিক্রিয়ায় আরাকানের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ভয়াবহ অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
সেনা সদস্যদের নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের মুখে টিকতে না পেরে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে কক্সবাজারের টেকনাফ জেলার কুতুপালংয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরে জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা সংস্থার পক্ষ থেকে তাদেরকে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান শুরু হয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত এই ব্যবস্থাই চলে আসছে। বর্তমানে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন ১৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দাতা সংস্থা অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ায় এর আগেও কয়েক দফায় হ্রাস পেয়েছে রোহিঙ্গাদের সহায়তা। তবে এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা স্থগিত থাকায় আগের চেয়ে পরিস্থিতি অনেক গুরুতর। কারণ জাতিসংঘের সর্বোচ্চ দাতাদেশ যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন ফিলিপ্পো গ্রান্ডি। বৃহস্পতিবার ঢাকা ত্যাগের আগে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি।