যুক্তরাষ্ট্রে কৃষিকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। ভুট্টা ও সয়াবিনের রোপণ দ্রুত অগ্রসর হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে দুই প্রধান কৃষিপণ্যের দাম কমেছে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তবে গমের বাজারে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে, আগের সেশনের বড় পতনের পর আজ দাম কিছুটা বেড়েছে। খবার বিজনেস রেকর্ডার
শিকাগো বোর্ড অব ট্রেড (সিবিওটি) সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ভুট্টার দাম ০.৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি বুশেল ৪.৮১ ডলার। সয়াবিনের দর ০.৩ শতাংশ কমে হয়েছে ১০.৫৯ ডলার। সোমবার গমের দাম ২.৫ শতাংশ কমে যাওয়ার পর আজ ০.৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৩৩ ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে দেশটির কৃষকরা ইতোমধ্যে ২৪ শতাংশ ভুট্টা রোপণ শেষ করেছেন। বিশ্লেষকদের গড় পূর্বাভাস ছিল ২৫ শতাংশ, তবে এটি পাঁচ বছরের গড় ২২ শতাংশের তুলনায় এগিয়ে। সয়াবিন রোপণ হয়েছে ১৮ শতাংশ, যা বিশ্লেষকদের ১৭ শতাংশ পূর্বাভাস ও পাঁচ বছরের গড় ১২ শতাংশের চেয়ে বেশি।
বিশ্বের বৃহত্তম সয়াবিন আমদানিকারক দেশ চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সংঘাতের ফলে মার্কিন কৃষকরা সয়াবিন থেকে মুখ ফিরিয়ে ভুট্টার দিকে ঝুঁকছেন। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস, ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভুট্টার আবাদ হতে পারে ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ, আর সয়াবিনের আবাদ পৌঁছাতে পারে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, আগামী ১০ দিনে মার্কিন সমভূমি অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। টেক্সাস ও ওকলাহোমার কিছু অংশে ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এই বৃষ্টি হার্ড রেড উইন্টার গমের (রুটি তৈরির প্রধান উপাদান) ফলনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইউএসডিএ’র সোমবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির ৪৯ শতাংশ শীতকালীন গম এখন ভালো বা চমৎকার অবস্থায় রয়েছে, যা গত সপ্তাহের ৪৫ শতাংশ থেকে উন্নত। তবে বিশ্লেষকদের ৪৭ শতাংশ পূর্বাভাসের চেয়েও বেশি।
সোমবার বাণিজ্যিক তহবিলগুলো সিবিওটি গম, ভুট্টা ও সয়ামিল ফিউচারে নেট বিক্রয় করেছে। তবে তারা সয়াবিন ও সয়াওয়েল ফিউচারে নেট ক্রেতা হিসেবে অবস্থান নিয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যদিও গমের বাজারে সাম্প্রতিক উন্নতি দেখা গেছে, তবুও চীন-মার্কিন বাণিজ্য দ্বন্দ্ব ও ফসলের বড় ফলন ভবিষ্যতে দামে আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আগামী সপ্তাহগুলোতে আবহাওয়ার অবস্থা এবং বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।