ফিলিস্তিনের গাজায় দীর্ঘ ২৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে ভয়াবহ আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস উৎখাত ও জিম্মি মুক্তির নামে প্রতিদিনই অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার সেনারা। পুরো বিশ্ব তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালেও নেতানিয়াহু প্রশাসনকে আগ্রাসনমূলক এসব কর্মকাণ্ডে নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। পরম বন্ধুর এমন সমর্থন পেয়ে যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দখলদার রাষ্ট্রটি।
এ অবস্থায় গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়াতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে তাদেরই ঘনিষ্ঠ চার মিত্র দেশ—যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং পর্তুগাল।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) পশ্চিমা এই চার দেশের ঐতিহাসিক এ স্বীকৃতিতে শুধু ফিলিস্তিনই খুশি হয়নি; স্বাগত জানিয়েছে পুরো বিশ্বই। বিবৃতির মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ—সৌদি আরব এবং কাতার। এছাড়া, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে অন্যান্য দেশগুলোকেও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
এক বিবৃতিতে সৌদি আরব জানিয়েছে, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি পশ্চিমা দেশগুলোর শান্তি প্রক্রিয়ায় অঙ্গীকারকে আরও সুদৃঢ় করেছে। সৌদি আরব ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি না দেয়া বাকি দেশগুলোকেও একই পথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দুই-রাষ্ট্র সমাধান নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথভাবে এক সম্মেলনের নেতৃত্ব দেবে সৌদি আরব। এদিকে কাতার জানিয়েছে, পশ্চিমা দেশগুলোর এ স্বীকৃতি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছে।
যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালের স্বীকৃতিকে একটি ‘মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ফিলিস্তিনি শীর্ষ নেতারা। ফাতাহের মোহাম্মদ শটাইয়ে বলেন, এটি মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন বড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল। ফিলিস্তিনের আরও একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, এটি গাজাবাসীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা।
তবে, ঘনিষ্ঠ মিত্ররা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ায় রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মিত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, জর্ডান নদীর তীরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কখনো গঠিত হবে না। সন্ত্রাসবাদকে অনেক বড় পুরস্কার দেয়া হচ্ছে, যা হতে দেওয়া হবে না।