প্রথম দিকে করোনাকে আমল দিতে চাননি তিনি। করোনা প্রতিরোধে সেরকম কোনো ব্যবস্থাও নেননি। সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরা, লকডাউন কোনও কিছুরই পক্ষে ছিলেন না ট্রাম্প। অ্যামেরিকায় করোনা হু হু করে বেড়েছে। তাও তিনি মাস্ক পরার কথা বলেননি। নিজেও পরেননি। সম্প্রতি তাঁর মুখে মাস্ক দেখা গেছে বটে, কিন্তু বলেছেন, অ্যামেরিকার লোকের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চাননি বলেই মাস্ক পরার কথা বলেননি।
সেই ট্রাম্পই এখন ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা ভুলে অ্যামেরিকার লোককে মাস্ক পরার কথা বললেন। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, অ্যামেরিকার করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তারপর অবস্থা ভালো হবে। ট্রাম্প যখন এই কথা বলছেন, তখন অ্যামেরিকায় প্রায় ৩৯ লাখ লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন এক লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ জন। করোনার মোকাবিলায় ট্রাম্পের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীা দলের নেতা থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা দাবি করছেন, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে করোনা নিয়ে ট্রাম্পের খামখেয়ালি নীতির প্রভাব পড়বে। এই অবস্থায় ট্রাম্প তাঁর আগের মত থেকে সম্পূর্ণ সরে এলেন।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া নিয়ে তিনি এর আগে বহুবার আশার কথা শুনিয়েছেন। বাস্তবে দেখা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি ভালো হওয়া দূরস্থান, সমানে খারাপ হয়েছে। চীন তো বটেই, ইউরোপের দেশগুলি করোনা পরিস্থিতি সামলে নিয়েছে। কিন্তু নিজেদের সব চেয়ে শক্তিমান বলে দাবি করা অ্যামেরিকা পারেনি। করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার নিরিখে তারা এখনও এক নম্বরে। এই অবস্থায় ট্রাম্প বলেছেন, ”দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হলো, করোনা পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আগে আরও খারাপ হবে। আমি এই কথাটা বলতে চাইনি। কিন্তু পরিস্থিতি এরকমই। কিছু স্টেট ভালো কাজ করছে। কিছু স্টেট করছে না। আমাদের দক্ষিণের অনেক জায়গায় করোনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।”
হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক বৈঠকে এর পরেই ট্রাম্প বলেন, ”আমরা সবাইকে বলছি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে না পারলে মাস্ক পরুন। আপনার মাস্ক পরা পছন্দ হতে পারে, নাও হতে পারে। কিন্তু মাস্ক পরার একটা প্রভাব আছে।” এই সত্যটা ট্রাম্প নিজেই এতদিন মানতে চাইছিলেন না। মাস্ক পরছিলেন না। সেই ট্রাম্পইবলছেন, ”আমি এখন মাস্ক-এ অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কোনও সমস্যা হচ্ছে না। আমি সব জায়গায় মাস্ক নিয়ে যাচ্ছি। পরছি। পরবও।”
ট্রাম্প জানিয়েছেন, ”ভ্যাকসিন আসছে। যত দেরি হবে বলে লোকে মনে করছে, তার থেকে তাড়াতাড়ি আসছে। আমাদের লক্ষ্য, করোনা নিয়ন্ত্রণই নয়, তাকে শেষ করে দেওয়া।”
ট্রাম্প এই কথাটা বললেন সেই সময়, যখন করোনা প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা চলছে। এক ট্রিলিয়ান ডলারেরও বেশি প্যাকেজ নিয়ে কথা চলছে। সূত্র: ডয়েচে ভেলে