ভারতের বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে কারফিউ জারি করা হয়েছে। লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর কবীন্দর গুপ্ত বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে বলেছেন, হানাহানি ও রক্তপাত বন্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে যারা উসকানি ও নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে কবীন্দর গুপ্ত বলেন, “সতর্কতা হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া নেওয়া হয়েছে। গত ২ দিনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের সবার পরিবারের সদস্যদের প্রতি স্বান্তনা জানাচ্ছি। কোনো ধরনের সহিংসতা সহ্য করা হবে না এবং সহিংসতা দমনে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
রাজধানী লেহ এবং অন্যান্য জেলা প্রশসানিক দপ্তরগুলোতে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে বলেও ভাষণে উল্লেখ করেছেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
প্রসঙ্গত, পৃথক রাজ্যের মর্যাদা প্রদানের দাবিতে গতকাল বুধবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় লাদাখের রাজধানী লেহ-তে। বিক্ষুব্ধ জনতা লেহ-তে বিজেপির কার্যালয় এবং নগর প্রশাসন ভবনে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। এতে ৪ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৯০ জন আহত হয়েছেন।
বিক্ষোভ উস্কে দেওয়ার জন্য জলবায়ুকর্মী সোনাম ওয়াংচুক এবং তার উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। লাদাখকে রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে বরাবরই সোচ্চার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জলবায়ু আন্দোলনকর্মী এবং ভারতের কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলটির বাসিন্দা সোনাম ওয়াংচুক। এই দাবিতে গত ১৫ দিন আগে অনশন শুরু করেন তিনি।
এই ১৫ দিন ধরে তার ভক্ত-অনুসারীরা সবসময়েই তাকে ঘিরে ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, গতকাল দুপুরের দিকে দিকে ভক্ত-অনুসারীদের উদ্দেশে নেপালের সাম্প্রতিক জেন-বিক্ষোভের সাফল্যকে তুলে ধরে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর সমাবেশ থেকে বেশ কয়েক জন উঠে সড়কে উঠে বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভ উস্কে দেওয়ার জন্য জলবায়ুকর্মী সোনাম ওয়াংচুক এবং তার উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এছাড়া উসকানি দেওয়ার অভিযোগে লেহ নগর প্রশাসনের কাউন্সিলর এবং কংগ্রেস নেতা ফুন্তসোগ স্তানজিন সেপাগের বিরুদ্ধে মামলা করেছে লেহ পুলিশ।
বিক্ষোভে সহিংসতা, পুলিশের ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বুধবার লেহ-তে রাতভর অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫০ জনকে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে কংগ্রেস নেতা সেপাগ থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।