সহিংসতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় শিকাগোসহ আরো দুটি ডেমোক্রেট অধ্যুষিত শহরে এই সদস্যদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
কিন্তু এর আগে পোর্টল্যান্ড ও অরেগন শহরে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন যে এর কারণে চলমান বিক্ষোভের সময়টাতে আরো বেশি উদ্বেগ তৈরি করেছে।
নভেম্বরের নির্বাচনে মি. ট্রাম্পের পুর্নির্বাচনের একটি বড় বিষয় হতে পারে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন।
গত ২৫শে মে মিনেসোটার মিনেয়াপোলিসে পুলিশি হেফাজতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে। বেশ কিছু শহরে এই বিক্ষোভ থেকে নৈরাজ্যও তৈরি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, লস-এঞ্জেলেস, শিকাগো এবং মিলওয়াকির মতো মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে বন্দুক নিয়ে সহিংসতা বেড়েছে।
লিজেন্ড ট্যালিফেরো নামে চার বছর বয়সী এক ছেলে শিশুর নামানুসারে এই কর্মসূচীর নামকরণ করা হয়েছে। ওই শিশুটি গত জুন মাসে কানসাসে বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকার সময় মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। বুধবার প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার সময় ওই শিশুটির মা উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জানায়, এই অভিযানে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই, মার্শালস সার্ভিস এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থার সদস্যরা স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে মিলে কাজ করবে।
মি. ট্রাম্প বলেন, সহিংসতার এই তাণ্ডব জাতির বিবেককে হতবাক করেছে।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ডেমোক্রেটরা দুর্বল বলে অভিযোগ তুলে প্রেসিডেন্ট বলেন, “সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে পুলিশ বিভাগের উপর আক্রমণ, এবং এতে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে কট্টর আন্দোলন চলেছে।”
এর জন্য তিনি “গুলির ঘটনা, হত্যা, খুন এবং ঘৃণ্য সহিংসতার ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়ে” যাওয়াকে দায়ী করেছেন।
“রক্তপাত অবশ্যই বন্ধ হতে হবে,” তিনি বলেন। “এই রক্তপাত অবশ্যই বন্ধ হবে।”
তিনি বলেন, “এর পর কোন মাকে আর তার মৃত শিশুকে কোলে নিয়ে ঘুরতে হবে না। এর আগে রাজনীতিবিদরা তাদের প্রতিবেশীদের নিরাপত্তা দিতে এবং শহরকে সুরক্ষিত করতে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।”
মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার যিনি মি. ট্রাম্পের সাথে উপস্থিত ছিলেন, তিনি জানান, তারা প্রায় দুই শ’ ফেডারেল এজেন্টকে কানসাস সিটি ও মিসৌরিতে পাঠিয়েছেন। এমন সংখ্যক আরো এজেন্টকে শিকাগোতে এবং প্রায় ৩৫ জনকে নিউ মেক্সিকোর আলবুকারকি-তে পাঠানো হবে।
৬০ মিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ বরাদ্ধ করা হবে যাতে সহিংসতা আক্রান্ত শহরগুলোতে আরো বেশি সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা যায়।
মি. বার বলেন, “অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে” কেন্দ্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বর্ধিত শাখা যুক্ত হবে। পোর্টল্যান্ডে “দাঙ্গা এবং সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে” যেভাবে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির এজেন্টদের নিয়োগ করা হয়েছিল ঠিক সেভাবেই এটি করা হবে।
গত ডিসেম্বরে সাতটি শহরে অপরাধমূলক ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পর তা নিয়ন্ত্রণে আনতে একই ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
মঙ্গলবার রাতে, ফেডারেল এজেন্টরা পোর্টল্যান্ডে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস, মরিচের বল এবং বিকট শব্দ তৈরি করে এমন গ্রেনেড ছোড়ে। পোর্টল্যান্ডে টানা ৫৪ দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা