রুশ ধনকুবের এবং ইংলিশ ফুটবল ক্লাব চেলসির মালিক রোমান আব্রামোভিচের কিছু কোম্পানি এমন একটি ইসরায়েলি কোম্পানিকে ১০ কোটি ডলার দান করেছে -যারা অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ইহুদি বসতি স্থাপনের কাজ করে। বিবিসির আরবি বিভাগের এক অনুসন্ধানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের এই সংগঠনের নাম এলাদ।
সিলওয়ানকে তারা ডাকেন ‘ইর ডেভিড’ বলে – যে হিব্রু নামের অর্থ ‘সিটি অব ডেভিড’।
এর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। তখন থেকে এ পর্যন্ত এই সিলওয়ানে প্রায় ৭৫টি বাড়িতে ইহুদি পরিবারের বসতি স্থাপন সম্পন্ন করেছে এলাদ।
এ প্রতিষ্ঠানটি আবার পর্যটনের ক্ষেত্রেও কাজ করে। সিটি অব ডেভিডের পুরাতাত্বিক আকর্ষণীয় স্থানগুলো দেখতে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি পর্যটক আসে। আর ওই পর্যটক আকর্ষণের স্থানগুলো পরিচালনা করে তারাই।
এলাদের সাবেক বিপণন পরিচালক হচ্ছেন শাহার শিলো। তিনি বিবিসিকে বলছেন, এলাদের কৌশলটা হলো, তারা সিটি অব ডেভিডে একটি ভিন্ন রাজনৈতিক বাস্তবতা সৃষ্টি করার জন্য পর্যটনকে ব্যবহার করছে।
এলাদ তার কাজের অর্থায়নের জন্য নির্ভর করে দাতাদের ওপর । গত ২০০৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তারা দান হিসেবে যে অর্থ পেয়েছে – তার অর্ধেকই এসেছে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের (বিভিআই) চারটি কোম্পানি থেকে।
তবে এই কোম্পানিগুলোর পেছনে যারা আছেন, তাদের নাম এতকাল সবার অজানাই ছিল ।
সম্প্রতি ‘ফিনসেন ফাইলস’ নামে যেসব ব্যাংকিংখাতের দলিলপত্র ফাঁস হয়েছে – তার মধ্যে কিছু দলিলপত্রে বিভিআইয়ের ওই চারটি দাতা কোম্পানির নাম আছে।
এসব দলিলপত্রে ব্যাংকগুলো তাদের আর্থিক লেনদেন এবং কোম্পানির মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য রিপোর্ট করেছে।
এসব দলিলপত্র ফাঁস করা হয়েছে বাজফিড নিউজের কাছে – যা তারা শেয়ার করেছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম এবং বিবিসির সাথে।
এই সব দলিল পত্রে দেখা যায় রোমান আব্রামোভিচের নাম।
তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবল ক্লাব চেলসির মালিক।
এলাদকে অর্থ দান করে এমন তিনটি কোম্পানির চূড়ান্ত মালিক হচ্ছেন মি. আব্রামোভিচই – আইনের ভাষায় যাকে বলে ‘বেনেফিশিয়াল ওনার’ । আর চতুর্থ কোম্পানিটিও নিয়ন্ত্রণ করেন তিনিই।
এলাদের এ্যাকাউন্টে দেখা যায়, এই কোম্পানিগুলো তাদেরকে যে অর্থ দিয়েছে তার পরিমাণ এখনকার বিনিময় হারে ১০ কোটি ডলারেরও বেশি হবে।
এর মানে হলো গত ১৫ বছরে এলাদকে এককভাবে সবচেয়ে অর্থ দান করেছেন রোমান আবামোভিচ। সূত্র: বিবিসি বাংলা