১৯৮৪ সাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর অলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে টানা তিনবার লাল সবুজ দলের প্রতিনিধিত্ব করে অন্যরকম রেকর্ডের অধিকারী হয়ে আছেন সাঁতারু ডলি আক্তার। এখন পর্যন্ত তাকে কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারেননি।
২০০০ সিডনি, ২০০৪ এথেন্স আর ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে এখনও স্মৃতি রোমন্থন করে নস্টালজিক হয়ে পরেন রাজবাড়ীর সাঁতারু।
টানা তিনবার অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে ডলি জানালেন, ‘আমার কাছে মনে হয় না কেউ টানা তিনবার অলিম্পিকে অংশ নিতে পারবে। আমার রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবে। আমি আসলে সে সময় কঠোর পরিশ্রম করেছিলাম। তারই ফল মিলেছিল। এছাড়া ভাগ্যও সহায়তা করেছে।’
২০০০ সিডনি অলিম্পিকে গিয়ে ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছিল ডলির। বয়স তখন মাত্র ১৩-১৪। ব্রেস্ট স্ট্রোক ইভেন্টে আগেভাগেই পুলে ঝাঁপিয়ে পড়ে ডিসকোলিফাইড হয়েছিলেন। যদিও পরের গেমসে নিজের একই ইভেন্টে হিটে প্রথম হয়ে সবাইকে চমকে দেন। ডলি বলছিলেন, ‘হতাশা আর অনেকের কটূ কথা শুনে তখন মনে জেদ চেপে যায়। এরপর অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাই। নিজেকে নতুন করে তৈরি করি। যার ফল পেয়েছিলাম হিটে প্রথম হয়ে।’
সাঁতারে কিংবদন্তি মাইকেল ফেলপসের সঙ্গে দেখাও হয়েছিল ডলির। বেইজিংয়ে একই সাঁতার কমপ্লেক্সে কাছাকাছি দূরত্বে ফেলপস আর তার সাঁতার অনুশীলন ছিল দারুণ উপভোগ্য। ডলির কথায়, ‘আমি ব্রেস্টস্ট্রোক করছিলাম, একটু দূরে ফেলপসকে দেখেছিলাম বাটারফ্লাই করছেন। উনি কতো বড় একজন সাতারু এখনও ভাবলে অবাক লাগে।’
এসএ গেমস ছাড়া সাঁতারে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক পদক নেই বললেই চলে। বিশেষ করে গেমসগুলোতে। ডলি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, ‘আসলে যেভাবে আন্তর্জাতিক গেমসের জন্য তৈরি হতে হয় সেভাবে কী আমরা পারি? গেমসে অংশ নিলে নিজের অবস্থান পরিষ্কার হয়।’
তিনবারের অলিম্পিয়ান হওয়ায় এখন সাঁতারে কোচ কিংবা যে কোনও পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা। আশ্চর্যের বিষয় ডলি ২০১৮ সাল থেকে সাঁতারের সঙ্গে আর নেই। সাঁতার ছেড়ে পুরোদস্তুর ভলিবল খেলোয়াড়!
কেন নেই? এমন প্রশ্নের উত্তরে বোঝা গেলো মনের গহীনে ক্ষোভ জমে আছে তার। তবে সরাসরি কিছু বলতে চাননি ডলি, ‘২০১৮ সালে সাঁতার ছেড়ে আসি। ২০০’র বেশি পদক ঘরোয়া আসরে আছে। এখন আনসারের হয়ে ভলিবল খেলি। সাঁতারে আর নেই। কেন নেই এখন তা নতুন করে বলতে চাই না। আমি না থাকলেও স্বপ্ন দেখি সাঁতারে বাংলাদেশ থেকে একসময় ভালো ফল হবে।’