সামাজিকমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকের নিবন্ধন এবং অফিস ও ডেটা সেন্টার স্থাপনে বাধ্য করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক ও রাষ্ট্রের তথ্য বাংলাদেশেই রাখতে হবে। সামাজিকমাধ্যমগুলো বাংলাদেশে বৈধ-অবৈধভাবে ব্যবসা করছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
সামাজিকমাধ্যমগুলোর লিয়াজোঁ অফিস করা যায় কিনা- এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফেসবুকে বাংলাদেশে যে ব্যবহারকারীর সংখ্যা তা অনেক বড়। বৈধ ও অবৈধভাবে যে আয় করে, অবৈধ পথে যেটা আয় করে সেটা অবৈধ। ফেসবুকে বৈধ-অবৈধ পথে আয় করে সেটা বিবেচনায় বাংলাদেশকে তাদের আরও গুরুত্ব দেয়া উচিত।
‘বাংলাদেশের আইন, ধর্মীয় মূল্যবোধ, নিরাপত্তা-শৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা উচিত। সে সব বিবেচনায় নিতে আমরা বহুবার বলেছি। আমরা লক্ষ্য করছি, তারা কিন্তু শুধু বৈধ এবং অবৈধ আয়ের দিকে আগ্রহী কিন্তু বাংলাদেশর জন্য তাদের সে রকম দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ দেখছি না,’ যোগ করেন পলক।
তিনি আরও বলেন, আমি আবারও আপনাদের মাধ্যমে বলছি, আমরা আবারও আনুষ্ঠানিকভাবে-দাফতরিকভাবে তাদের লিখব, যেন তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে তাদের অফিস, তাদের ডেটা সেন্টার তাদের সব কার্যক্রম নিবন্ধিত করেন এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের তথ্য-উপাত্ত যেন বাংলাদেশের মাটিতেই রাখেন।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ‘আমাদের তথ্য-উপাত্ত আমাদের অজান্তে ব্যবহার করছে তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য। আমরা কোনটা পছন্দ করি, কোন রেস্টেুরেন্ট খাই, কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করি, কোন সিনেমা দেখি, কোন ধরনের পোস্ট আমি দিই, কোন ধরনের কাপড় পরি- এই ধরনের তথ্য-উপাত্তগুলো তারা গোপনে সংগ্রহ করে আমাদের সামনে বিজ্ঞাপনগুলো প্রদর্শন করে।’
তিনি বলেন, ‘যে বিজ্ঞাপনগুলো থেকে তারা আয় করে তার কিন্তু কোনো অংশীদারিত্ব পাই না আমরা। আমার যে তথ্য তারা গোপনে সংগ্রহ করছে সেটাও আমাদের অনুমতি ছাড়া হচ্ছে।’
‘এটা কিন্তু আইনগতভাবে অপরাধ, মানবিকভাবেও অপরাধ এবং আমাদের নাগরিকদের জন্য স্পর্শকাতর-সেনসেটিভ তথ্য-উপাত্ত তারা যে দিচ্ছে এবং ব্যবহার করছে ব্যবসায়িক স্বার্থে এবং বৈধ-অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশ থেকে তারা অর্থ উপার্জন করছে এগুলো আমরা মেনে নিতে পারি না,’ যোগ করেন পলক।
তিনি বলেন, যে কারণে আমরা ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, সবাইকে বাংলাদেশে তাদের নিবন্ধন করা এবং অফিস ওপেন করা, ডেটা সেন্টার স্থাপন করা এবং বাংলাদেশের নাগরিক, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান সবকিছুর ডেটা বাংলাদেশেই রাখার জন্য বাধ্য করব।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ’র সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।