বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার মেয়ে জাইমা রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে করা এক মামলায় সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে টক শো উপস্থাপক মহিউদ্দিন হেলালের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. কাউসার আলম এ পরোয়ানা জারি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘মানহানির এই মামলায় তাদের দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।’
২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালতে এই মামলার আবেদন করেন জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম ওমর ফারুক।
মামলার বাদী আইনজীবী একেএম ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি ও তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত। ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর মুরাদ হাসান ও উপস্থাপক মহিউদ্দিন হেলাল ভার্চ্যুয়ালি একটি টক শো করেন। সেখানে তারেক রহমান ও জাইমা রহমান সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, নারী বিদ্বেষী ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন মুরাদ হাসান। অনুষ্ঠানের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করা হয়। জিয়া পরিবার ও তার নাতনি জাইমা রহমানকে অপমান-অপদস্থ ও হেয় প্রতিপন্ন করতেই ভিডিওটি আসামিরা ছড়িয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনায় মুরাদ হাসান ও মহিউদ্দিন হেলালের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছিলাম। তখন মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে ডিবি পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে ডিবি পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আদালত শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে মুরাদ হাসান ও উপস্থাপক মহিউদ্দিন হেলালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আমরা অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।’
প্রসঙ্গত, জাইমাকে নিয়ে মুরাদ হাসানের অশ্লীল মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হয়েছিল। তখন ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মুরাদ হাসানের ফোনালাপের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নোংরা ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একইসঙ্গে তাকে হুমকিও দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। পদ হারানোর পর মুরাদ হাসান কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ি উপজেলা) আসনের সাবেক এমপি। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।