কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পদ্মায় ভাঙনের পর ভারতের দখলে থাকা ২০০ একর জমি ফেরত পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের জমির মালিকরা। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) কুষ্টিয়া সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বিবদমান ওই জমি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ওই জমি পুনরায় জরিপ করে মালিকানা প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
জানা যায়, রোববার দুপুরে বিএসএফের আহ্বানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুণ্ডির জামালপুর বিওপির সীমান্ত পিলার ১৫২ /৭-এস থেকে আনুমানিক ১৫০ গজে অভ্যন্তরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিবদমান জমি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া ভারতকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ও মাদক পাচার রোধে গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (পিএসসি) মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান।
তিনি জানান, বিবদমান জমি পুনরায় জরিপ করে প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এরমধ্যে চলতি বছরের গত ১০ ফেব্রুয়ারি চল্লিশপাড়া বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার ১৫৭/এমপি হতে ৮৫/১০-এস এলাকায় উভয় দেশের সার্ভেয়ার এবং বিজিবি-বিএসএফ সীমানা পরিমাপের সিদ্ধান্ত হয়। আলোচনা অনুযায়ী, বাংলাদেশের জমি ভারতের অভ্যন্তরে আনুমানিক ২০০ একর এবং ভারতের জমি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আনুমানিক ৪০ একর বিদ্যমান রয়েছে।
এই জমি আগামী অক্টোবরে সুবিধাজনক সময়ে উভয় দেশের সার্ভেয়ার এবং বিজিবি-বিএসএফের উপিস্থিতিতে জমির প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেয়া হবে। এত উভয় দেশের ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেছেন।
এ সময় সীমান্তের অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়, তা হলো: প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, ভারত হতে বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য এবং নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ না করা, নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিককে সীমান্ত হতে আটক না করা এবং আসন্ন দূর্গাপূজা উপলক্ষে সীমান্তবর্তী জনসাধারণ অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে মণ্ডপে আসতে না পারে সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়।
সৌজন্য সাক্ষাতে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান। অপরদিকে বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ১৪৬ ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্ট বিক্রম দেব সিং। আলোচনা শেষে উভয় দেশের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষ করেন।