বিসিএসে আবেদনের ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বয়স-সীমা দুই বছর বাড়ানো হলেও চিকিৎসকদের আবেদনে পূর্বের বয়স-সীমাই রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই বৈষম্য নিরসন করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে চিকিৎসকদের বয়স-সীমা বাড়ানোর দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এই আল্টিমেটাম দেন।
এ সময় চিকিৎসক ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, গত দেড় বছরে আমার বার বার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়েছি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছি। সবাই শুধু আমাদের আশ্বাস দিয়েছে আর বলেছে আমাদের দাবি যৌক্তিক। কিন্তু আমাদের দাবি মানার বিষয়ে কারও কোন পদক্ষেপ আমরা দেখিনি।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে আমরা দেখছি যে, কোনও দাবিই আন্দোলন ছাড়া মানা হচ্ছে না। ভাতা বৃদ্ধির বিষয়েও চূড়ান্ত আন্দোলনের পর দাবি মানা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকদের কাজ তো আন্দোলন করা নয়। যে কারণে আমরাও কোনও আন্দোলনে যেতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি প্রজ্ঞাপন জারি করা না হয়, তাহলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেউ হয়তো আমাদের দাবি নিয়ে ভুল বুঝবেন। আমরা বয়স ৩৪ করার দাবি করছি না। আমরা চাই আমাদের সঙ্গে যেন বৈষম্য না হয়৷ সরকার চাইলে বয়স-সীমা ৩৪ করতে পারে, ৩৫ বা ৩৬ বছরও করতে পারে। আমরা চাই ডাক্তারদের সঙ্গে যে বৈষম্যটা করা হচ্ছে, সেটি যেন না হয়।
ডক্টরস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সভাপতি ও ইউমবের মুখপাত্র ডা. মোবারক হোসেন বলেন, গত কিছুদিন আগেই ৪৭ তম বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু প্রজ্ঞাপনে আবেদনকারীর বয়সসীমা ৩০ থেকে ৩২ বছর উল্লেখ করা হলেও, চিকিৎসকদের বয়সসীমা নিয়ে কিছুই বলা হয়নি। কিন্তু অন্যান্য বিসিএস আবেদনকারীর স্নাতক শেষ করতে যেখানে ন্যূনতম ৪ বছর প্রয়োজন হয়, সেখানে চিকিৎসকদের এমবিবিএস-বিডিএস স্নাতক ও ইন্টার্নশিপ শেষ করতে নূন্যতম ৭৮ মাস বা সাড়ে ৬ বছর লাগে।
তাই পূর্ববর্তী সকল সাধারণ বিসিএস পরীক্ষায় যেখানে আবেদনকারীদের বয়সসীমা ৩০ বছর ছিল সেখানে চিকিৎসকদের বয়সসীমা ৩২ বছর ছিল। সর্বশেষ প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে সবার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ২ বছর বৃদ্ধি করে ৩২ করা হলেও চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে কোনো বয়স বৃদ্ধি হয়নি। ফলে চিকিৎসকরা এই ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে আমরা মনে করি।
আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, আমরা শুরুতেই শাহবাগ অবরোধ করতে চাই না। আমরা চাই সরকার যেন আমাদের দাবির গুরুত্ব অনুধাবন করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মেনে নেয়। আমরা ৪৭ তম বিসিএসেই বয়সসীমা ৩৪ দেখতে চাই। অন্যথায় চিকিৎসকরা ক্ষুব্ধ হয়ে কঠোর কর্মসূচি দিলে তখন আর আমাদের কিছুই করার থাকবে না।