জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখতে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে সরকারের প্রচেষ্টায় ভূমিকা রাখারও আহবান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল সন্ধ্যায় সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সম্মেলন উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কাউন্সিলরদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেখা যায় একবার একজন এমপি হয়ে গেলে পরের বার আর জয়লাভ করতে পারে না। কারণ সে জনগণের আস্থা ধরে রাখতে পারে না। অনেক টাকা হলেও নির্বাচনে জিততে পারেন না।’ ‘কাজেই জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে’।
শেখ হাসিনা গত ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে পর পর ৯ম বারের মত ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বড় নেতা আমার সঙ্গে ঘুরে বেড়ায় আর শ্লোগান দেয় আমি জিতে যাব। নির্বাচন কিন্তু তা নয়। অংকের মত বের করা যায়, কার পজিশন কি। এবারের নির্বাচনে আমরা সেটাই করেছি।
তিনি বলেন, নিজেরা পুরো হিসেব নেয়ার পর একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা দিয়েও জরিপ করানো হয় প্রত্যেক এলাকায়। এভাবে হিসেব করতে হয়। এটা আমাদের দলের সব নেতা-কর্মীদের মাথায় রাখা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কে মানুষের কাছে বেশি যেতে পারছেন, কে মানুষের বেশি আস্থা অর্জন করতে পারছেন, কে ভোট আনতে পারবেন এটা একেবারে অংকের মত হিসেবের ব্যাপার। নির্বাচন করা একটা অংকের মত হিসাব।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তারেক জিয়া খুব গর্ব করে বলতো দুই হাজার কোটি টাকা যদি সে বানাতে পারে জীবনেও বিএনপিকে আর ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না। অথচ পাঁচ হাজার কোটি টাকার উপরে বানিয়েও তারা ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘তাদের দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন সবকছু মিলিয়েই ইমার্জেন্সী আসে। পরে বিএনপি মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল’।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি এই কথা বার বার বলি, কারণ অনেকেই ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিএনপি এত কম আসন পেল! অথচ বিএনপি তাদের মেয়াদ পেরিয়েই ২০০৮ সালের নির্বাচনে পেল ২৯টি আসন। আবার বিরোধী দলে থাকতে আন্দোলনের নামে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, গাড়ি পোড়ানো এবং মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সাল থেকে বিএনপি’র মানুষের ওপর সেই অত্যাচার-নির্যাতন-দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং জনগণের সেই বিভীষিকাময় অবস্থা, এতকিছুর পর তাদের জনগণ ভোট কেন দেবে? আর তারাতো জয়লাভের জন্য নির্বাচন করেনি, মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। আসন প্রতি দুই-তিনটা করে মনোনয়ন দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্রদের ঘর-বাড়ি করে দিয়ে আমরা পুনর্বাসিত করতে পারি। আমাদের তরফ থেকে এই উদ্যোগ থাকতে হবে। তাহলেই দরিদ্র বলে আর কেউ থাকবে না।
তিনি বলেন, কেবল সরকারের একার নয়, এ ক্ষেত্রে যদি আমাদের নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ থাকে তাহলে দ্রুত এই দারিদ্র্য বিমোচন আমরা করতে পারবো।
শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, ‘যদি সংগঠন করতে চান, তাহলে আগে মানুষের কাছে যান, তাদের কি সমস্যা তা জানার চেষ্টা করুন।’
অনলাইন নিউজ ডেস্ক/বিজয় টিভি