ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অভাবনীয় প্রযুক্তির বিকাশের কারণে কায়িক শ্রম যন্ত্রনির্ভরতায় রূপান্তরিত হবে।রূপান্তরের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিজিএমইসহ সবাইকে তৈরি থাকতে হবে যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্স, আইওটি, ব্লকচেইন কিংবা বিগডেটা প্রযুক্তির দাপটে আমাদের প্রচলিত কায়িকশ্রমে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
তাদেরকে কর্মক্ষম রাখতে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তির যুগেও বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে না। আমরাই তৈরি পোষাক রপ্তানি করবো, আমরা রোবট, আইওটি, ব্লকচেইন, এআই, বিগডাটা এসব প্রযুক্তিও ব্যবহার ও রপ্তানি করবো। বাংলাদেশ চমৎকার সময়ে আছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ শনিবার ঢাকায় বিজিএমই আয়োজিত সংগঠনের সদস্যদের জন্য মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।বিজিএমই সভাপতি রুবানা হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এটুআই প্রোগ্রামের সিনিয়রপলিসি এডভাইজর আনীর চৌধুরী ও বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএ সামাদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বিজিএমই‘র ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল হতে হবে এবং এই ক্ষেত্রে ট্রেডবডিসমূহকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।ডিজিটাল প্রযুক্তিতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় গার্মেন্টস শিল্পের অভাবনীয় অগ্রগতিকে দেশের জন্য গর্বের উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের কর্মীরা দক্ষতায় পৃথিবীর সমকক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।তিনি বলেন, অতীতে তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করেও গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব প্রদানের মতো উপযোগী হিসেবে সক্ষমতা অর্জন করেছে।
আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। করোনাকালে দেশে শতকরা ৭২ ভাগ রোগী ঘরে বসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে চিকিৎসা সেবা নিয়েছে উল্লেখ করে দেশে কম্পিউটার বিপ্লবের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, গত ১২ বছরে ডিজিটাল হাইওয়ে সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষকেও ডিজিটাল সেবা প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি মানুষ উচ্চগতির ইন্টারনেটের আওতায় আসবে।
তিনি বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলোর মানব সংকট কাটাতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলেছে। অন্যদিকে জাপান সেসাইটী ৫.০ এর কথা বলেছে। জাপান মনে করে সোসাইটী ৫.০ মানবিক আর চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যান্ত্রিক। আমাদেরকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, তবে আমাদের মতো করে। এই বিপ্লব সকল দেশের জন্য এক নয়-একই নীতি-কৌশল ও পদ্ধতি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাই অনুকরণ নয় মেধা ও সৃজনশীলতা দিয়ে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বানাবো।
রুবানা হক দ্রুততম সময়ে বিজিএমই ডিজিটালাইজেশনে যাওয়ার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।এরই ধারাবাহিকতায় তিনি শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।এসব প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারের পথ প্রদর্শক জনাব মোস্তাফা জব্বার প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ডিজিটাল কনটেন্ট প্রদানে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।