কুমিল্লায় বোরকা পরে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম সোহেল শিকদার, তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের খুরশিদ মিয়ার ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩৬) ও দাউদকান্দি উপজেলার গোপচর গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে শাহআলম ওরফে পা কাটা আলম (৩৬)।
গ্রেপ্তারকৃত আওয়ামী লীগ নেতা শাহিনুল ইসলাম সোহেল শিকদারের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যাসহ নয়টি, ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে দুইটি হত্যাসহ তিনটি এবং পা কাটা আলমের বিরুদ্ধে একটি হত্যাসহ ১০টি মামলা রয়েছে।
রোববার (৭ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ এসব তথ্য জানান।
কর্নেল তানভীর বলেন, যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে হত্যার পর গৌরীপুর বাজারের সকল সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করে ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব। সিসিটিভি ফুটেজে বোরকা পরা যে ৩ দুর্বৃত্তকে দেখা গেছে, তারা গৌরীপুর বাজারের গলির সামান্য দূরে গিয়ে বোরকা খুলে স্বাভাবিকভাবে হেঁটে যায়। তাতে তাদের মুখমণ্ডল স্পষ্ট দেখা না গেলেও তিন দুর্বৃত্তের অবয়ব চিহ্নিত করে র্যাব। তবে ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দেয় সবাই। র্যাব আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শনিবার (৬ মে) ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারের পর তিন দুর্বৃত্ত যুবলীগ নেতা জামাল হত্যার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, মূলত গৌরীপুর বাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই হত্যার পরিকল্পনা করেন সাবেক তিতাস উপজেলার চেয়ারম্যান সোহেল শিকদার। কিলিং মিশনের সব কৌশল সোহেল শিকদারের।
কর্নেল তানভীর বলেন, মামলায় এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মো. সুজন ও ২ নম্বর আসামি আরিফ হোসেন নেপালে, ৫ নম্বর আসামি বাদল দুবাইয়ে, ৬ নম্বর আসামি শাকিল ভারতে এবং ৮ নম্বর আসামি অলি হাসান সৌদি আরবে পালিয়ে গেছে। মামলার ৯ নম্বর আসামি কালা মনির এখনও দেশেই আত্মগোপনে রয়েছে। বিদেশে পালিয়ে যাওয়া আসামিদের দেশে ফেরাতে এবং হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাব-১১ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজার এলাকায় যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে বোরকা পরে গুলি করে তিন দুর্বৃত্ত। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত জামাল হোসেন তিতাস উপজেলার নোয়াগাঁও জিয়ারকান্দি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। গৌরীপুরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন জামাল। হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর জামাল হোসেনের স্ত্রী বাদী হয়ে ১৭ জনকে আসামি করে দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।