ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী-২ আসনের সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ ৪৫০ জনের বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে মো. ইউসুফ নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ফেনী সদর সডেল থানায় ৬৫ জনের নাম উল্লেখসহ মোট ৪৫০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় নিজাম হাজারীকে। ৪ আগস্ট মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে অটোরিকশা চালক মো. সবুজ নিহতের ঘটনায় তিনি মামলাটি দায়ের করেন।
নিহত মো. সবুজ লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার দক্ষিণ টুমচর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।
মামলার আসামিরা হলে, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতন, ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার, ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছনুয়া ইউপি চেয়ারম্যান করিম উল্যাহ বি.কম, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ মিলন, শর্শদী ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা, ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন, পাঁচগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন, ধলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার আহমেদ মুন্সী, লেমুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাসিম, ধর্মপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাকা, কাজিরবাগ ইউপি চেয়ারম্যান কাজী বুলবুল আহমেদ সোহাগ, কালিদহ ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম, মোটবী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ, মাতুভূঞা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন, সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বাদল, পৌরসভার কাউন্সিলর জয়নাল আবদীন লিটন হাজারী, আশরাফুল আলম গীটার, লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, আমির হোসেন বাহার, কহিনুর আলম রানা, গোলাম মেহেদী আলম চৌধুরী রুবেল, হারুন উর রশিদ মজুমদার, বাহার উদ্দিন বাহার, আবুল কালাম, সাহাব উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর মজিবুর রহমান ভূঞা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল জলিল আদর, জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউল আলম মিস্টার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্যাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল বাহার ফয়সাল, সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, সদর উপজেলা সভাপতি নুরুল আবছারে আপন, পৌর যুগ্ম-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটু, রেজাউল করিম নাদিম, সহ-সম্পাদক আবুল কালাম সোহেল, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম মোহন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ, যুগ্ম-সম্পাদক রাকিব অর্ণব, পৌরসভার সাবেক সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত রাজু, সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুস শুক্কুর মানিক, সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল ফিরোজ, জেলা তাঁতী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওমর এলাহী সুমন, ধলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি নুরুল আলম বাদশা, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ডালিম, স্থানীয় যুবলীগ নেতা সরোয়ার হোসেন রতন, হায়দার হোসেন পিংকু, শর্শদী ইউনিয়নের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সম্রাট, মহিপাল ছাত্রলীগ নেতা নাহিয়ান চৌধুরী ও সোমবার ভারতে পালানোর সময় আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে গ্রেফতার হওয়া নিজাম হাজারীর পিএস ও জেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক ফরিদ মানিক ওরফে পিএস মানিক।
এজাহারে ইউসুফ উল্লেখ করেন, গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তার ভাই সবুজ অংশ নেন। ওইদিন দুপুর ২টার দিকে ট্রাংক রোড থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ শুরু করে এগোতে থাকলে সবুজ সার্কিট হাউজ রোডের দিকে চলে যান। সেখানে স্বপন মিয়াজী, জানে আলম, মাহবুবুল হক লিটন ও অর্ণব গুলি চালালে এতে বিদ্ধ হয়ে সবুজ লুটিয়ে পড়েন, তখন অপর আসামিরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে সবুজের মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পুনরায় হামলার আশংকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে দাফন করা হয়।
গত ৪ আগস্ট মহিপালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে গুলিতে সবুজসহ ১১ জন নিহত হন।
ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রুহুল আমিন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলায় পিএস মানিককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।