কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে হাসপাতাল কর্মচারী নিহত হওয়ার ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত ইউসুফ শেখের (৬৬) মেয়ে সীমা বাদী হয়ে রবিবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন। এতে ৭৫ জনকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়। ইউসুফ শেখ কুষ্টিয়া শহরের চর থানাপাড়া এলাকার মৃত এদাত আলীর ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে চাকরি করতেন। ৫ আগস্ট বিকালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
এর আগে কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আবদুল্লাহ নামে এক কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে হানিফকে প্রধান আসামি করে আরেকটি মামলা করা হয়েছিল। ওই মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও ১০-২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
ইউসুফ শেখ হত্যা মামলায় হানিফের পাশাপাশি তার চাচাতো ভাই সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি রবিউল ইসলাম, সহসভাপতি কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ নন্দী, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কোষাধ্যক্ষ অজয় সুরেকা ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ইউসুফ শেখ কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছিলেন। কুষ্টিয়া শহরের ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনের নূর টেইলার্স গলির ভেতরে পৌঁছালে এজাহারনামীয় আসামিরা তাকে দেখে ধাওয়া করেন। এরপর হানিফ ও তার চাচাতো ভাই আতাউর রহমানের নির্দেশে আসামিরা তাকে গুলি করেন। অন্য আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলার আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’