শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম উকিল (৬৭) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
রাজধানীর বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২৫ জুন আব্দুল হালিমের নমুনা পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ার পর তাকে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার ‘প্লাজমা থেরাপি’ চলছিল।
এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শেরপুর জেলার ছয় অধিবাসীর মৃত্যু হলো। তবে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্থানীয়ভাবে তিনজনের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল হালিম নালিতাবাড়ী পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি ছিলেন সেখানকার প্রথম নির্বাচিত পৌর চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
কৈশোরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া ১১ নম্বর সেক্টরের এ অকুতোভয় মুক্তিসৈনিক বিভিন্ন সম্মুখ সমরে অংশ নিয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। তিনি ঐতিহাসিক কাটাখালি যুদ্ধে কমান্ডার শহীদ নাজমুলের সহযোদ্ধা ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি:
এক দিনে আরও ৫৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া আরও ২৭৩৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা জানান, ৬৮টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৯৬৪টি। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে আগের নমুনাসহ ১৩ হাজার ৯৮৮টি। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬২টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭৩৮ জনসহ দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ জন। নতুন করে আরও ৫৫ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৫২ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯.৫৭ শতাংশ। আর মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯. ২০ শতাংশ। আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.২৬ শতাংশ।
নতুন করে মারা যাওয়া ৫৫ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৭ এবং নারী ১৮ জন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৪১ জন এবং বাড়িতে ১৪ জন। ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন সর্বোচ্চ ১৯ জন।
ঢাকা বিভাগে মোট ১০০৭ জন, চট্টগ্রামে ৬৩৪, রাজশাহী বিভাগে ১০২, খুলনায় ৮৮, বরিশাল বিভাগে ৭২, সিলেট বিভাগে ৮৬, রংপুরে ৬১ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৯ জন মারা গেছেন।
এদিকে, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৯০৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৬২৫ জন। সুস্থতার হার ৪৪.৭২ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সূত্র: ইউএনবি