গাজীপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর এবার নাগরিক কমিটি বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে। সংগঠনটির দাবি এই হামলা আওয়ামী দোসর ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন চালিয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুর ডিসি অফিস চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের করছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
এ বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি বলেছে, গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর খুনি আ ক ম মোজাম্মেল ও জাহাঙ্গীর এবং আওয়ামী দোসরদের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে বিচার নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।
গাজীপুরে হামলার ঘটনায় শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম লেখেন, গাজীপুরে আজকেই হবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেষদিন, আমরা আসছি…।
এর আগে, শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙতে শুরু করে বিক্ষুব্ধরা। এ সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের মধ্যে মো. হিমেল, নাভিল আহাম্মেদ, মো. হাসান, গৌরব, শুভ, ইয়াকুব, অপু, বিশাল, ইমন হোসেন ও জাহিদুল ইসলামের নাম জানা গেছে। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রমের দক্ষিণখানে মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুর করতে যায়। এ সময় মসজিদের মাইকে মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। মাইকিং শুনে আশপাশের লোকজন বাড়িটি ঘিরে ফেলেন এবং ভাঙচুরকারী কয়েকজনকে মারধর করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একইসঙ্গে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়। সেখান থেকে গুরুতর আহত কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন মাহমুদা আখতার বলেন, ১৫-১৬ জনকে তাজউদ্দীন মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার পরিচয় দিয়ে সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধদের আটক করে মারধর করেছেন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।