বোন প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পাঁচ বছর বয়সী ছোট ভাইকে অপহরণ করেন চাচাতো ভাই। এরপর শিশু মোহাম্মদ আবিদ পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করেন তিনি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি মো. তারেক আজিজকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কোম্পানি কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম।
গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মধ্যম জুমছড়ি এলাকার মোহাম্মদ আজিজের ছেলে। নিহত শিশু মোহাম্মদ আবিদ একই এলাকার মোহাম্মদ ইসহাকের ছেলে। গ্রেফতার তারেক নিহত শিশুর আপন চাচাতো ভাই।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, মোহাম্মদ আবিদের বড় বোনকে তারেক আজিজ দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বড় বোনকে প্রেমে রাজি করাতে ছোট ভাই আবিদকে প্রায় সময় চকলেট, আচারসহ অন্য খাবারের লোভ দেখিয়ে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালায় তারেক আজিজ। এতে ব্যর্থ হয়ে আবিদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারেক।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাড়ির পাশে খেলাধুলা করছিল শিশু আবিদ। একপর্যায়ে আবিদকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে তারেক আজিজ ইজিবাইকে করে পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকায় বাঁকখালী নদী পাড়ে নিয়ে যায়। ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে আবিদের সঙ্গে তারেক খেলাধুলা করে। যাতে আবিদকে হত্যা ঘটনায় কেউ তাকে সন্দেহ না করে। পরে নদীর পাড়ে গাছের সঙ্গে আবিদকে বেঁধে রেখে বাড়ি চলে যায় তারেক।
তারেক আজিজের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, সন্ধ্যার পরও আবিদ বাড়ি ফিরে না আসায় স্বজনরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। সন্দেহ এড়াতে বাড়ি ফিরে তারেকও আবিদকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে স্বজনরা বাড়ি ফিরে গেলে তারেক আবারো বাঁকখালী নদীর পাড়ে যায়। এরপর আবিদের হাতের বাঁধন খুলে জুমছড়ি এলাকার স্থানীয় একটি পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করে মরদেহ পানিতে ভাসিয়ে দেয়।
তিনি বলেন, নিখোঁজ হওয়ার দিন রাতে অজ্ঞাত একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল আসে আবিদের মায়ের ফোনে। এ সময় তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আর মুক্তিপণের টাকা না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। পরদিন সকালে ওই পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় আবিদের মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে গত বুধবার সদর থানায় একটি মামলা করেন। পরে র্যাব ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। বুধবার মধ্যরাতে গোপন সংবাদে পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকার একটি বাড়িতে তারেক আজিজের অবস্থান নিশ্চিত হয় র্যাব। র্যাব সদস্যরা সন্দেহজনক বাড়িটি ঘেরাও করেন। এ সময় ধাওয়া করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত তারেককে কক্সবাজার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।