যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে কমতে শুরু করেছে। এতে জেলার বন্যার পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে দীর্ঘ সময় পানিবন্দি থাকা এলাকাগুলোতে দেখা দিচ্ছে পানিবাহিত নানা রোগ। পানি কমলেও জেলার পাঁচ উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে এ পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু হয়েছে।
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন– শাহজাদপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর মহল্লার আব্দুল হামিদের ছেলে (১৮) এবং শাহজাদপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মারুফ হোসেন; একই মহল্লার শাহ আলমের ছেলে সজল হোসেন (১৮); তৌহিদের ছেলে তন্ময় শেখ (২০); চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ইটাইল গ্রামের বায়জিদের ছেলে কাউসার (৩); একই উপজেলার খাষপুকুরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কোদালিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে মাহিম হোসেন (৫) এবং সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সাহেদনগর ব্যাপারীপাড়ার আলী হোসেনের ছেলে এবং সবুজ কানন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রোমান হোসেন (১৪)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৭ জুলাই থেকে সিরাজগঞ্জে বন্যার পানি কমতে শুরু করলে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া বন্যাকবলিত মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু গত ১০ জুলাই আবারও যমুনা নদীর পানি বাড়ায় বিপাকে পড়ের তারা। তবে, দুদিন যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির পরে আবারও কমতে শুরু করেছে পানি। একই সঙ্গে কমছে অভ্যন্তরীণ হুরা সাগর, কাটাখালী, ফুলজোড়, ইছামতী নদীর পানি।
শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, ‘গত ১২ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর শহররক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে উজানে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। সেই পানি বাড়লে যমুনায় বাড়বে। চলতি বন্যায় জেলার ভাঙনকবলিত এলাকায় ভাঙন রোধে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। তবে চলতি বন্যায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।
তিনি আরও জানান, যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। যমুনার পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল।
সিরাজগঞ্জ ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ১৩৩ টন চাল, ৫ লাখ টাকা, ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। চলতি বন্যায় নৌকা ডুবে চার জন এবং পানিতে ডুবে চার জনের মৃত্যু হয়েছে।