টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক পরিবার। স্থানভেদে দেখা দিয়েছে পাহাড়ধসের সম্ভাবনা।
বুধবার (৩১ জুলাই) থেকে অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ঘুমধুম ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হওয়া পরিবারগুলোর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমকূল, ক্যাম্পপাড়া, ঘোনার পাড়া, হিন্দুপাড়া,বাজারপাড়া; ২ নম্বর ওয়ার্ডের কোনার পাড়া, মধ্যমপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হওয়াতে জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যসংকট। এদিকে ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে পাহাড়ধসে মাটির টুকরোর সঙ্গে বড় বড় গাছ রাস্তার ওপর পড়ায় এবং ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাহাড়ধসে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তুমব্রু পশ্চিমকূল গলাছিড়া নামক স্থানের পাহাড়ের ওপর বসবাসত নুরুল কবির, গোরা মিয়া, বাজারপাড়ার ফরিদ আলমসহ ৫-৬টি পরিবার।
নুরুল কবিরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার রাত ৮টার দিকে পাহাড়ের একটি অংশ ধসে রাস্তার ওপর পড়ে এবং বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দ্বিতীয় অংশটি বাড়ির বারান্দা বরাবর ধসে পড়াতে খুব বেশি আতঙ্কে দিন কাটছে। রাস্তাটি প্রশস্ত করার সময় পাহাড়টি খাড়া করে কর্তন করাতে আজকে এই দিন দেখতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিদুল হক বলেন, ‘রাস্তার দুই পাশে যদি টেকসই গাইড ওয়াল দেওয়া হয় তাহলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাচঁতে পারে আতঙ্কিত পরিবারগুলো।’
ঘুমধুমের সিএনজিচালিত অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার ও টমটম ড্রাইভাররা জানিয়েছেন, বৃষ্টি ও পাহাড়ধসে রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় সারাদিন গাড়ি চালাতে না পেরে তাদেরও চিন্তার শেষ নেই।
এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়া, রাস্তা, দোকান প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি অনেক স্থানে পাহাড়ধসে রাস্তাঘাটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে আছে।’ উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকারিয়া বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজখবর রাখছে। আমি ইতোমধ্যে জেলা ত্রাণ শাখায় কথা বলেছি। তাদের (পানিবন্দি) যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’