কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় গুলিতে নিহত হয়েছেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার চৌলাবুনিয়া গ্রামের রায়হান হোসেন (১৭)।
শনিবার (১৭ আগস্ট) চৌলাবুনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এখনো থামেনি রায়হানের মা রেহেনা খাতুনের কান্না। তার পরিবারে এখন কেবলই হতাশা।
ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে রেহেনা বলেন, ‘আমার ছেলের কী দোষ ছিল? সে বৈষম্যহীন একটি ব্যবস্থা চেয়েছিল। ওরা আমার ছেলেকে ছয়বার গুলি করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো অন্যায় করেনি; কেন তাকে গুলি করে হত্যা করা হলো? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
রায়হানের বাবা কামাল হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে মন দিয়ে লেখাপড়া করতো। আমাদের স্বপ্ন ছিল সে ভালো রেজাল্ট করবে, একদিন সরকারি চাকরিতে যোগ দেবে, আমাদের অভাবের সংসারের হাল ধরবে। তার অকাল মৃত্যুতে আমাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।’
জানা গেছে, পটুয়াখালীর একটি মাদরাসা থেকে আগামী বছর রায়হানের দাখিল পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। তার বাবা কামাল আকন দিনমজুরের কাজ করেন এবং মা রেহেনা গৃহিণী। ছোট বোন জান্নাতির বয়স মাত্র পাঁচ বছর। গত জুলাইয়ে ঢাকায় চাচার বাসায় বেড়াতে আসেন তিনি। চাচার বাসায় থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন এবং সিদ্ধান্ত নেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি ফিরবেন না। গত ৫ আগস্ট সকালে বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন গুলি চলায়, সে সময় রায়হানের বুকে ও পায়ে মোট ছয়টি গুলি লাগে। তাকে দ্রুততম সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন।